বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন রাজনৈতিক দল : রিজভী

2 hours ago 1

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও রাকসুর সাবেক ভিপি রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন একটি রাজনৈতিক দল। গণতন্ত্র আর বিএনপি হলো অবিভাজ্য একটি বিষয়। বহুদলীয় গণতন্ত্র আর জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান অবিভাজ্য একটি সংকল্প। এটাকে কখনো খণ্ডিত করা যায় না।’

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) টিএসসিসি ভবনে শাখা ছাত্রদলের আয়োজনে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’-এর ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রশ্নে এরশাদের সঙ্গে যেমন কোনো আপস করেনি, তেমনি রক্তচোষা হাসিনার সঙ্গেও কোনো আপস করেনি খালেদা জিয়া। সেই প্রেরণা নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং ৭ নভেম্বরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সে (শেখ হাসিনা) পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তাই ৭ নভেম্বর অল্প পরিসরে বলা যায় না। ৭ নভেম্বরেই আমরা সত্যিকারের স্বাধীনতা পেয়েছি। কারণ স্বাধীনতার একজন তূর্যবাদক লাগে, যিনি নির্ভয়ে সাহসিকতার সঙ্গে স্বাধীনতার যুদ্ধ পরিচালনা করেন। ’৭১ সালে নির্দ্বিধায় কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে মেজর জিয়া বলেছিলেন ‘আমি জিয়া বলছি, আমি স্বাধীনতার ঘোষণা করছি।’ এরই মাধ্যমে তিনি স্বাধীনিতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং ঠিক একইভাবে ৭ নভেম্বরও একই ব্যক্তি আবারও রেডিওতে ভেসে উঠলো ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’ বলে। ৭ নভেম্বরের অবদানের মূল নায়ক জিয়াউর রহমান।’

রিজভী বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সহাবস্থান তৈরি হয়েছে যা গত ফ্যাসিবাদ আমলে ছিল না। ফ্যাসিবাদ যেখানে জন্মলাভ করে এবং বিকাশলাভ করে সেখানে গণতন্ত্রের ন্যূনতম জায়গা থাকে না। ফ্যাসিবাদের ছোবলে যখন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশন, সংবাদপত্র এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আক্রান্ত হয়, তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও আক্রান্ত হয়। শেখ হাসিনারটা একনায়কতন্ত্র শাসন নয়, সেটা তার থেকেও খারাপ অর্থাৎ ফ্যাসিবাদী শাসন ছিল। সেসময় ক্যাম্পাসে কোনো সহাবস্থান ছিল না।  বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারেনি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্লাসরুম, লাইব্রেরিতে নির্বিঘ্নে যেতে পারেনি। সেই পরিস্থিতি ছাত্রদলকে ১৫-১৬ বছর অতিক্রম করতে হয়েছে।’

আলোচনা সভায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘জুলাই আগস্টে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে আমাদের ১৪২ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছে কিন্তু অনিয়মে ভরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলোতে ছাত্রদল হয়তো প্রত্যাশিত ফলাফল করতে পারেনি। বিভিন্ন অনিয়ম ও ষড়যন্ত্রের মধ্যে নির্বাচনগুলো হলেও আমরা মনে করি ছাত্রদলের আরও ভালো ফলাফল করা উচিত ছিল। 

তিনি বলেন, ডাকসু এবং জাকসুতে ভিপি, জিএস এবং এজিএস-পদে যারা নির্বাচিত হয়েছে তারা আওয়ামী লীগের সময় হলে অবস্থান করেছে এবং তৎকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে মিলেমিশে তারা রাজনীতি করেছেন। কিন্তু তার বিপরীতে শুধু ছাত্রদল না অন্যান্য ছাত্র সংগঠন থেকে যারা নির্বাচন করেছেন তারা কেউ সেসময়ে হলে অবস্থান করতে পারেনি শুধু ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে নির্বাচন করার কারণে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুটি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরে আমি ভাবছিলাম যে, বাংলাদেশে যতগুলো ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে এবং সেখানে যারা ভিপি, জিএস নির্বাচিত হবে তাদের পিছে ছাত্রলীগের পদ পদবি থাকতে হবে এরকম একটা কন্ডিশন চলে আসছে। হয়তো চারটি ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আমরা পরাজিত হয়েছি এ পরাজয়ের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

রাবি ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ যখন শহীদ জিয়াউর রহমানকে বন্দি করেছিল, ঐক্যবদ্ধ সিপাহী জনতা ৭ নভেম্বর তাকে মুক্ত করে এনেছিলেন। এই দিনটি শুধু একটা সাধারণ তারিখ না, এটা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে প্রকাশ করে। বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে তুলে ধরতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আব্দুল আলিম, ফোকলোর বিভাগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বাবু,  জিয়া পরিষদের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবসহ প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মী।

Read Entire Article