নীলফামারীর জলঢাকায় বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষের শঙ্কায় পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
সোমবার (৩১ মার্চ) রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জলঢাকা পৌরসভা এলাকার পেট্রোল পাম্প ও জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এলাকায় একাধিক পক্ষ থেকে একাধিক স্থানে এবং ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সভা-সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। সমাবেশ ঘিরে বর্ণিত এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবহিত করেছেন।
সে প্রেক্ষিতে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে জলঢাকা পৌর এলাকায় সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এ সময় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত, বিক্ষোভ, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র বহনসহ পাঁচজনের অধিক ব্যক্তির একত্রে চলাচলে বা অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, জলঢাকা উপজেলা বিএনপির পক্ষে গত ৩০ মার্চ জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই মাঠে ঈদের দিন বিকেল থেকে তিন দিনের জন্য মেলার আয়োজন করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম ও তার পক্ষের লোকজন মেলা কমিটির আহ্বায়ক জলঢাকা উপজেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন এবং জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবু সাঈদ শাকিলসহ মেলা কমিটির অন্য সদস্যদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে মেলা প্রাঙ্গণ ভাঙচুর করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) জলঢাকায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করেন তারা।
অপরদিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে উপজেলা ও পৌর বিএনপির পক্ষে মেলা কমিটির বিরুদ্ধে মেলার নামে চাঁদাবাজি ও মেলা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। এতে ঈদের দিন বিকেল থেকে জলঢাকা উপজেলা শহরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
জলঢাকা থানার ওসি আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, কোনো পক্ষ যাতে কোনো কর্মসূচি পালন করতে না পারে সে জন্য জলঢাকা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং ১৪৪ ধারা জারির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন কালবেলাকে বলেন, ইউএনও হিসেবে উপজেলার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। তাই দুই পক্ষের একই সময় পাশাপাশি স্থানে সমাবেশ আহ্বান করায় সংঘাতের আশঙ্কা করেছি। এ কারণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।