বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে দেশত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনাসহ অন্যরা

1 hour ago 5

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছিল, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করে সফলতা নিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনাসহ অন্যরা বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে দেশত্যাগ করেছেন। দেশ থেকে পালিয়ে যেতে তারা বাধ্য হয়েছেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হওয়া মামলায় পলাতক আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন নাহিদ। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজ আমার সাক্ষ্য দেওয়া, জেরা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছি। এটা অবশ্যই মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে এই অপরাধ লেখা হয়ে থাকবে।’

এনসিপির শীর্ষ নেতা নাহিদ আরও বলেন, ‘এই মামলায় ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনাকে আসামি করে মামলা চলমান। আমি মনে করি এটি শুধু ব্যক্তির সংঘটিত অপরাধ নয় বরং এটি রাজনৈতিক অপরাধ। ফলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। ট্রাইব্যুনালের সে সুযোগ আছে। ট্রাইব্যুনালের কাছে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ এসেছে। শেখ হাসিনা যেহেতু দলীয় প্রধান, রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে জনগণকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জনগণ প্রতিরোধ করে তাকে উৎখাত করেছিলেন। ফলে এটা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের সংঘটিত অপরাধ। দ্রুত সময়ে আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনা উচিত।’

আন্দোলনে দেশি-বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল-এমন অভিযোগের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। তার (শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে এক দফা ঘোষণা করে তাকে উৎখাত করার প্রস্তুতি নেওয়া বৈধ। এখানে ষড়যন্ত্রের কিছু নেই। জনগণের পক্ষ থেকে বৈধ ছিল। জনগণের অভ্যুত্থান হিসেবে জুলাই-আগস্ট সংঘটিত হয়েছে। এখানে দেশি-বিদেশি শক্তির কোনো ইন্ধন ছিল না।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, যার নেতৃত্বে জুলাইতে সাধারণ ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন তিনি নাহিদ ইসলাম। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিনি তৃতীয় দিনে এসে তার সাক্ষ্য শেষ করেছেন।

এর আগে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার জবানবন্দি দেন নাহিদ ইসলাম। এরপর বৃহস্পতিবার তাকে জেরা শুরু করেছিলেন আইনজীবী।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এর আগে গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছেন, তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।

এফএইচ/এমএমকে/জিকেএস

Read Entire Article