বিতর্কে হার মানল লা লিগা, বার্সা–ভিয়ারিয়ালের মায়ামি ম্যাচ বাতিল
শেষ পর্যন্ত আর ইতিহাস লেখা হলো না। বহু জল্পনা-কল্পনা, বিতর্ক আর কূটচাল শেষে লা লিগা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছে ডিসেম্বরের মায়ামিতে অনুষ্ঠিতব্য বার্সেলোনা–ভিয়ারিয়াল ম্যাচটি। ইউরোপের বড় কোনো লিগের প্রথম নিয়মিত ম্যাচ বিদেশে আয়োজনের স্বপ্ন তাই আবারও থেমে গেল স্পেনের রাজনীতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের বিরোধিতায়।
লা লিগা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উত্তর আমেরিকায় তাদের পার্টনার প্রতিষ্ঠান ‘রিলেভেন্ট স্পোর্টস’ই আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাচটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্পেনে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা ও প্রতিক্রিয়ার কারণে মায়ামি ম্যাচের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি স্প্যানিশ ফুটবলের আন্তর্জাতিকীকরণের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হতে পারত, যা দুর্ভাগ্যবশত সম্ভব হলো না।’
মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে ২০ ডিসেম্বরের ম্যাচটির টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার কথা ছিল এই সপ্তাহেই। কিন্তু পরিকল্পনা ঘিরে রাজনৈতিক চাপ ও বিতর্ক এতটাই বেড়ে যায় যে, আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ার মতো পরিবেশ অবশিষ্ট ছিল না। রিলেভেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে যথাযথভাবে আয়োজন করা সম্ভব নয়। নিশ্চিত ম্যাচ ছাড়া টিকিট বিক্রি শুরু করাও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা হবে।’
এর আগে খেলোয়াড়দের সংগঠন এএফই মাঠে নেমেই প্রতিবাদ জানায়—লা লিগার প্রতিটি ম্যাচের শুরুতে ১৫ সেকেন্ড খেলা বন্ধ রাখেন ফুটবলাররা। রিয়াল মাদ্রিদ, সমর্থক সংগঠনগুলো এবং এমনকি কিছু সরকারি মন্ত্রীও খোলাখুলিভাবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। মাদ্রিদ জানিয়েছিল, ‘দেশের বাইরে লিগ ম্যাচ আয়োজন প্রতিযোগিতার ন্যায্যতাকে বিকৃত করে এবং বিপজ্জনক নজির তৈরি করে।’
বার্সেলোনার কোচ হানসি ফ্লিক ও তার খেলোয়াড়রাও এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিলেন না। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ‘এটা খেলোয়াড়দের জন্য ভালো কিছু নয়, ভ্রমণ ও ক্লান্তির কারণে পারফরম্যান্সেও প্রভাব পড়বে।’
একই মত দেন রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া, যিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এটা সম্পূর্ণভাবে প্রতিযোগিতার সততা নষ্ট করবে।”
২০১৮ সাল থেকেই লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাসের স্বপ্ন ছিল—স্প্যানিশ ফুটবলকে আমেরিকার বাজারে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু ফিফা, উয়েফা, আরএফইএফ ও দেশীয় ক্লাবগুলোর বিরোধিতায় সেই পরিকল্পনা কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি। এবারও তাই হলো।