বিদুৎ বিলও উঠছে না দেশের সর্ববৃহৎ নভোথিয়েটারের

2 months ago 8

রাজশাহীতে ৩৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় নভোথিয়েটার। দৃষ্টিনন্দন এই নভোথিয়েটার শুরু থেকেই দর্শক সংকটে ভুগছে। ফলে গত দুই বছরে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটি চলছে লোকসানের মধ্যেই।

নভোথিয়েটারে টিকিট বিক্রির আয়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ ব্যয় হয়। এমনকি বিদ্যুৎ বিলও পরিশোধ করতে পারে না তাদের আয় দিয়ে। বলা চলে নভোথিয়েটারের আয় দিয়ে উঠছে না বিদুৎ বিলই।

বিদুৎ বিলও উঠছে না দেশের সর্ববৃহৎ নভোথিয়েটারের

গণপূর্ত অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান উদ্যানের সামনে নির্মাণ শুরু হয়। এর সঙ্গে জমির দাম যুক্ত হলে মোট ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ৩৭১ কোটি টাকা। এতে আছে ২০০ আসনের মাল্টিপারপাস হল, একটি ৬০ আসন বিশিষ্ট সভাকক্ষ, সায়েন্টিফিক লাইব্রেরি, নভো ক্যাফেটেরিয়া, স্ন্যাকস বার এবং ৮৫টি গাড়ির পার্কিং সুবিধা। দেশের সর্ববৃহৎ পরিধির এ স্থাপনায় রয়েছে প্ল্যানেটেরিয়ামসহ ফাইভ-জি হল ও আধুনিক অবজারবেটেড টেলিস্কোপ; যা দেশে প্রথম। তবে মূল্যবান একাধিক টেলিস্কোপ থাকলেও নেই অপারেটর।

এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সাপ্তাহিক ছুটি বুধবার। খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। নভোথিয়েটারে প্রবেশ টিকিট ৩০ টাকা। এক ঘণ্টার শো ১০০ টাকা। এছাড়া ৫০ টাকায় উপভোগ করা যায় ইমারসিভ রাইড সিমুলেটর, ৫ডি মুভি অথবা ডিজিটাল অ্যান্ড সায়েন্টিফিক এক্সিবিটস গ্যালারি। নভোথিয়েটারে প্রতিদিন গড়ে পাঁচটি শো হওয়ার কথা থাকলেও দিনে কোনো দিন এক বা দুটি, কোনো দিন সর্বোচ্চ তিনটি শো হয়। এসব শোতে দর্শক থাকে মাত্র ১০ থেকে ১৫ জন।

রাজশাহী নভোথিয়েটারের তথ্য মতে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে প্রতিষ্ঠানটি তাদের বিভিন্ন প্রদর্শনী ও প্রবেশ টিকিট বিক্রি করে আয় করেছে ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৩০ টাকা। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতিষ্ঠানটির বাৎসরিক বিদ্যুৎ বিল আসে গড়ে ৭২ থেকে ৮০ লাখ টাকা। সর্বশেষ মে মাসে প্রতিষ্ঠানটির বিদুৎ বিল এসেছে ৮ লাখ ৬৩ হাজার ৩২৯ টাকা। এর বাহিরে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের বেতনসহ বিভিন্ন খরচতো আছেই।

বিদুৎ বিলও উঠছে না দেশের সর্ববৃহৎ নভোথিয়েটারের

নভোথিয়েটারের দর্শনার্থী নাইম ইসলাম বলেন, ছোট বেলায় বাবা মায়ের কাছে থেকে শুনেছি তারা নাকি ঢাকায় এটি দেখেছে। এখান রাজশাহীতে এটি হয়েছে শুনে এখানে এসেছিলাম। কিন্তু এখানেতো মেইন যে শো প্ল্যানেটেরিয়াম, সেটি দর্শক না হলে চালায় না। এখান বাধ্য হয়ে ঘুরে যেতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থী রাইশা নাজনিন বলেন, নভোথিয়েটারে প্রথমবার এলাম। এখানে তেমন কিছু দেখতে পাইনি। তবে টিকিটের মূল্যগুলো বেশি। সত্যি বলতে ভেতরের পরিবেশ আর থ্রিডি প্রদর্শনী ছিল অসাধারণ। কিন্তু টিকিটের মূল্য একটু কমালে ভালো হতো।

রাজশাহী নভোথিয়েটারের উপপরিচালক এবাদত হোসেন বলেন, আমরা রাজশাহী নভোথিয়েটারকে জনপ্রিয়ভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি। এরইমধ্যে স্কুল ও কলেজগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা এটিকে শিক্ষার জন্য ব্যবহার করবে। আশা করি এটি জনপ্রিয় হবে।

এফএ/জিকেএস

Read Entire Article