বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। সবার সঙ্গে সুসম্পর্কের ভিত্তিতে বন্ধুত্ব হবে, তবে কারোর প্রভুত্ব মেনে নেওয়া হবে না।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ভাষা আন্দোলন থেকে গণ-অভ্যুত্থান: অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের এখনো ছয় মাস না যেতেই কারা এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড ছিল, সেই ডিগনিটি (মহত্ত্ব) এখন হাইজ্যাক করা হচ্ছে। অনেক বড় নেতা বলেন, আমরা এই আন্দোলনে ছিলাম না। কিন্তু তার ছাত্ররা বলে আমরাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড। কি বলবেন আপনি? আমি বলব, এ আন্দোলনের সব শহীদ ও গাজীরাই এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সংগঠিত তিনটি গণঅভ্যুত্থানে শাসকের পরিবর্তন হয়েছিল। এর মধ্যে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ছিল বৈষম্যবিরোধী স্বাধিকার অধিকারের পক্ষে। এ দেশের মানুষের বিপুল সংগ্রাম বিপুল আন্দোলন গ্রেফতার হত্যা নির্যাতনের কঠিন পথ মানিয়ে তদানীন্তন সময়ে আন্দোলন তৈরি করেছিল তখনকার শাসকগোষ্ঠী পরাজয় বরণ করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। তখন জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তখন আদালতে লড়াই করে জামায়াতে ইসলামী আবার বৈধতা অর্জন করে পাকিস্তানের জামায়াত ইসলামের রাজনীতি করতে হয়েছে।
৯০-এর গণঅভ্যুত্থান হয়েছে আরেকটি ঐতিহাসিক আন্দোলন। সে আন্দোলনের জনগণ সেনাবাহিনী পুলিশ একটি স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে একাকার হয়েছে সেটা বিরল দৃষ্টান্ত। আরেকটা গণঅভ্যুত্থান যেটাকে আমরা জুলাই অভ্যুত্থান বলি। ইতিহাসের অনেক নিষ্ঠুর নির্দয় পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য লজ্জার ইতিহাস তৈরি করে তাকে বাংলাদেশের মানুষ তাড়িয়ে দিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শুধুমাত্র নির্বাচনী সংস্কার নয় রাষ্ট্র পরিচালনার প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। এসব সংস্কার শেষ না করে কোনো নির্বাচন দেওয়া যায় না। তাহলে যারা ক্ষমতায় বসবে তারাও ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে। ক্ষমতায় বসার আগেই কেউ কেউ তাদের ফ্যাসিস্ট চরিত্র দেখাচ্ছে। রাজনৈতিক শিক্ষার অভাবে তারা ভিন্নমত ও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চা করার আহ্বান জানান।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল আজিজ। নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তৃতা করেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরের নায়েবে আমির হেলাল উদ্দিনসহ অন্যরা।
এএএম/এমআইএইচএস/এমএস