বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ (বিএইচসিআই) কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত ৫ লাখের বেশি উচ্চ রক্তচাপের রোগী বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবার আওতায় এসেছেন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিয়মিত ওষুধ পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ রোগীর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভার তথ্য অনুযায়ী, কর্মসূচির আওতায় এসেছেন ৫ লাখ ১৮ হাজার ১৪৮ জন রোগী। এর মধ্যে শুধু ঢাকা বিভাগেই ১ লাখ ১৩ হাজার ১৯২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের মধ্যে ৫৮ শতাংশের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সভায় বিএইচসিআইয়ের ডিভিশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার মো. আহসান-উজ-জামান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তারা জানান, দেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ, যার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ও সংশ্লিষ্ট কার্ডিওভাসকুলার (হৃদ্পিণ্ড ও রক্তনালী সম্পর্কিত) রোগের দায় প্রায় ৩৪ শতাংশ। বর্তমানে বিএইচসিআই ৪৪টি জেলার ৩১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সভায় জানানো হয়, ডিজিটাল হেলথ অ্যাপ ব্যবহারের ফলে রোগী ট্র্যাকিং, ফলোআপ ও চিকিৎসা আরও কার্যকর হয়েছে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের হার পূর্বের ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যুর হার দ্রুত বাড়ছে। তাই সরকার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) কর্নারে বিনা মূল্যে ওষুধ বিতরণ করছে।
এসময় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের প্রধান ও বিএইচসিআই পরিচালক সোহেল রেজা চৌধুরী জানান, দেশে প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগলেও মাত্র সাত ভাগের এক ভাগ নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়মিত চেকআপ ও বিনা খরচে চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) শাখার লাইন ডিরেক্টর সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হার্ট প্যাকেজ বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালী হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ও বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় বিএইচসিআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়াসহ ৯ জেলার সিভিল সার্জন, এনসিডিসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক ও অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসইউজে/একিউএফ/জেআইএম