বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শতবর্ষী মানুষ জাপানে, পাচ্ছেন সম্মাননা

5 hours ago 4

জাপানে শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা নতুন রেকর্ড গড়েছে। দেশটিতে এখন ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় এক লাখে পৌঁছেছে, যা বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। চলতি সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জাপানে শতবর্ষীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৭৬৩ জন। এর মধ্যে প্রায় ৮৮ শতাংশই নারী।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাকামারো ফুকোকা এ উপলক্ষে সব শতবর্ষী নারী-পুরুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা শুধু বয়সের দিক থেকে উদাহরণ নন, বরং সমাজের জন্য আজীবন অবদান রেখে গেছেন।’

জাপানে ১৫ সেপ্টেম্বর পালিত হয় প্রবীণ দিবস। এই দিন উপলক্ষে শতবর্ষীদের নাম প্রকাশ করা হয় এবং নতুন শতবর্ষীরা প্রধানমন্ত্রী থেকে অভিনন্দনপত্র ও রূপার কাপ উপহার পান। এ বছরই ৫২ হাজারের বেশি মানুষ এই সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য হয়েছেন।

জাপানের দীর্ঘায়ুর পেছনে রয়েছে সুস্থ খাদ্যাভ্যাস, সক্রিয় জীবনধারা এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটির মানুষের খাবারে মাছ ও শাকসবজি বেশি, লাল মাংস কম। একই সঙ্গে লবণ-চিনি কম খাওয়ার সংস্কৃতি রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে। স্থূলতার হারও বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় এখানে অনেক কম। ফলে হৃদরোগ ও ক্যানসারজনিত মৃত্যুহার কম। নারীদের মধ্যে স্থূলতা আরও কম হওয়ায় তাদের আয়ুষ্কাল পুরুষদের তুলনায় বেশি।

এছাড়া জাপানিরা প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, সাইকেল চালানো এবং শরীরচর্চার অভ্যাস ধরে রাখেন। প্রায় এক শতাব্দী ধরে জনপ্রিয় ‘রেডিও তাইসো’ নামের তিন মিনিটের ব্যায়াম এখনো লাখো মানুষ দলবদ্ধভাবে করে থাকেন। এতে শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে এবং সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়।

বর্তমানে জাপানের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হলেন ১১৪ বছর বয়সী শিগেকো কাগাওয়া, যিনি নারা অঞ্চলে বসবাস করছেন। অন্যদিকে সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ হলেন ১১১ বছরের কিয়োতাকা মিজুনো।

যদিও মাঝে মাঝে রেকর্ড নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ২০১০ সালে এক নিরীক্ষায় দেখা যায়, কিছু রেকর্ডে মৃত ব্যক্তিদের নামও তালিকায় থেকে গেছে। এমনকি টোকিওর সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত সোগেন কোটোর দেহাবশেষ মৃত্যুর ৩২ বছর পর পাওয়া গিয়েছিল। এরপর সরকার পুরোনো তথ্যভান্ডার হালনাগাদে উদ্যোগ নেয়।

তবুও একটি সত্য অস্বীকার করার উপায় নেই—জাপানই বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শতবর্ষীর দেশ, আর এর পেছনে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা ও সচেতন সমাজ ব্যবস্থার অবদান অনস্বীকার্য।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া 
 

Read Entire Article