একটা সময় প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণিতে এবং মাধ্যমিকে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো। ক্লাসের আগ্রহী ও রোল নম্বরে এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিতো। বার্ষিক পরীক্ষার পর সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যবস্থাপনায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃত্তি পরীক্ষা হতো। তাতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পেত।
২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ২০১০ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা চালুর পর পৃথকভাবে পরীক্ষা নিয়ে বৃত্তি দেওয়ার পদ্ধতি বাতিল করা হয়। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ফলাফলের ভিত্তিতে ৫০ হাজার শিক্ষার্থী বৃত্তি পেত।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে এ দুটি পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। পরে ২০২২ সাল থেকে স্থায়ীভাবে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। ২০২৩ সাল থেকে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমেও এ দুটি পরীক্ষা ছিল না। ফলে প্রশ্ন ওঠে, পৃথকভাবে বৃত্তি পরীক্ষা হবে কি না? ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় বৃত্তি পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১’ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২০১২ সালে প্রণীত সৃজনশীল পদ্ধতি বহাল করা হয়েছে। এতে গতানুগতিক ধারায় আগের মতো বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। ফলে আগের নিয়মে বৃত্তি পরীক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে পুরোনো পদ্ধতিতে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রাথমিকের সমাপনীর (পঞ্চম শ্রেণি) আগে পৃথক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দফায় দফায় পরীক্ষা নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ বাড়বে বলেই বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছিল। এখন তা আবার চালু করলে কোচিং ও গাইড ব্যবসা রমরমা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, এটা নতুন কিছু নয়। পুরোনো পদ্ধতিতে আবার ফেরা হচ্ছে। শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে বাধ্য করা হবে না। যারা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী, তাদের পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে এমনটি ছিল একসময়। শিশুরা ছোটবেলা থেকে প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বড় হতে শিখবে।
এএএইচ/এমআরএম/জেআইএম