ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিষ্ণুদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় এক যুগ ধরে জরাজীর্ণ কক্ষে চলছে পাঠদান। এতে পড়ালেখার বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকেন, কখন মাথার ওপর ভেঙে পড়ে জরাজীর্ণ টিনের চাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে সবসময় ঝুঁকিতে থাকেন ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চে বসেই ফুটো চাল দিয়ে দেখা যায় আকাশ। দরজা-জানালাও ভাঙা। একটু বৃষ্টি হলেই বেঞ্চে পানি পড়ে। শ্রেণিকক্ষের মধ্যেও পানি ঢুকে যায়। এতে করে কমে যাচ্ছে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৪২ সালে উপজেলার ৩৯নং বিষ্ণুদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে মোট ২১৯ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে রয়েছে ৮০ জন শিক্ষার্থী। স্কুলের পুরাতন টিনশেড ভবনটিতে প্রায় এক যুগ ধরে পাঠদান চলছে। দীর্ঘদিন ধরে ঘরটি মেরামত না করায় রোদ-বৃষ্টি আর সাপের আতঙ্কে দিন কাটছে শিক্ষার্থীদের।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মাহামুদা আক্তার জানায়, শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চে বসে উপরের দিকে তাকালেই খোলা আকাশ দেখা যায়। দরজা জানালা ভাঙা। টিনের ছিদ্র দিয়ে একটু বৃষ্টি হলেই বেঞ্চে পড়ে পানি। রোদ-গরমে ক্লাস করতে কষ্ট হয়।
বিষ্ণুদী গ্রামের বাসিন্দা আবু সামাদ মাতুব্বর বলেন, শ্রেণিকক্ষের অবস্থা খুবই করুণ। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও পাঠদান চলছে। কখন দুর্ঘটনা ঘটে, সেই আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন-
স্বামীর পরকীয়া নিয়ে কলহ, স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
এক হাত-পা ছাড়া জীবন কাটলেও এবার দুই কিডনির কাছে হারতে বসেছেন রিনা
চাঁদা না পেয়ে তাণ্ডব চালানো সেই যুবদল নেতাকে বহিষ্কার
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা ও অভিভাবক মুন্নু শেখ বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরাও আতঙ্কে থাকি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিষ্ণুদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড কক্ষে পাঠদান ও নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, পুরাতন ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি অপসারণের জন্য নিলামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাশেম উদ্দীনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এন কে বি নয়ন/এফএ/এএসএম