বেনাপোল বন্দর দিয়ে আড়াই বছর পর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে প্রথম চালানে ভারতীয় একটি ট্রাকে ১৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। নানা প্রতিবন্ধকতায় ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল।
এতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছিল বাগেরহাটের এস এম ওয়েল ট্রেডার্স ও রপ্তানিনিকারক ছিল প্রতিষ্ঠান ভারতের ন্যাশনাল ট্রেডিং করপোরেশন। বন্দর থেকে পেঁয়াজের চালানটি ছাড় করার জন্য মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) কাস্টমস হাউসে কাগজপত্র দাখিল করেছেন সিএন্ডএফ লিংক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
জানা যায়, প্রতি মেট্রিক টন ৩০৫ ডলারে আমদানি মূল্য দেখানো হয়েছে। যা বাংলাদেশি টাকায় ৩৭ হাজার ৪২৯ টাকা। আমদানিকৃত পেঁয়াজ মানভেদে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে পারে।
এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে প্রথম দিনেই স্থানীয় বাজারে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমে গেছে। বাজারে আমদানি কমের অজুহাতে দেখিয়ে মঙ্গলবার সকালেও ৭০ টাকা দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু বলেন, এর আগে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করেছিল। পরে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে ভারত। বর্তমানে দেশে চাহিদার বিপরীতে আমদানি ও পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাড়াচ্ছিল দাম। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় এ খাদ্যদ্রব্যটি কিনতে গুণতে হচ্ছিল অতিরিক্ত টাকা। অবশেষে সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়।
জাহাঙ্গীর আলম নামে একজন পেঁয়াজ ক্রেতা বলেন, আমদানির খবরে প্রথম দিনে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। এতে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা যে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছিল সেটা বোঝা গেল।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী শ্যামল কুমার নাথ জানান, আজ প্রথম চালানে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এস এম ওয়েল ট্রেডার্স ১৫ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছেন। পেঁয়াজের মান পরীক্ষা শেষে বন্দর থেকে খালাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
একটি তথ্যে জানা গেছে, প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৭-২৮ লাখ মেট্রিক টন। সেখানে গত বছর উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি পেঁয়াজ। গত দুই বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় আট লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার থেকে উৎপাদন বেশি থাকলেও সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের বাজার উর্ধ্বমুখী হওয়ায় আমদানি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
মো. জামাল হোসেন/এমএন/এএসএম