বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি, ডুবেছে ফসলি জমি

9 hours ago 5

নওগাঁর মান্দায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকশ পরিবার।

শনিবার (১৬ আগস্ট) সকারে মান্দা উপজেলার তালপাতিলা এলাকায় বেড়িবাঁধের একটি অংশ ভেঙে গেছে।

নওগাঁর নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। আত্রাই নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লোকালয়ে পানি ঢুকে তালপাতিলা ও উত্তর চকরামপুর গ্রামের কয়েকশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি। ভেসে গেছে বেশ কিছু জলাশয়ের মাছ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েকদিন ধরে নদীর পানি বাড়তে থাকায় রাত জেগে বেড়িবাঁধ পাহারা দিচ্ছিলেন তারা। শনিবার ভোরের দিকে বাঁধের এক অংশে লিকেজ দেখা দেয়। এলাকাবাসী তা মেরামতের চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁধটি রক্ষা করা যায়নি।

তালপাতিলা গ্রামের বাসিন্দা এমদাদুল হক বাবুল বলেন, ২০২৩ সালের বন্যায় এ স্থানে বেড়িবাঁধটি ভেঙে গিয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন মেরামতের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এটি খোলা অবস্থায় ছিল। দেড় মাস আগে বাঁধটি সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়। কিন্তু এবার নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আবারও ভেঙে গেছে।

তিনি আরও বলেন, বাঁধ মেরামতের পর আমরা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলাম। অনেকেই জলাশয়ে মাছ চাষ করছিলেন। এখন সবই পানির নিচে। বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি। 

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখতার জাহান সাথী কালবেলাকে বলেন, বেড়িবাঁধ ভাঙার খবরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ মেরামতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, দুর্গত কয়লাবাড়ি গ্রামের ২২টি পরিবারকে তাৎক্ষণিক খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল দুপুর ১২টর দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মান্দা উপজেলার জোতবাজার পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার এবং রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

আত্রাইয়ের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ি, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া, গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল কালবেলাকে বলেন, আমরা যথাযথভাবে নদীরক্ষা বাঁধগুলো মনিটরিং করছি। সরেজমিন তদারকি করা হচ্ছে।

Read Entire Article