ব্যবহারকারীদের ক্ষতিপূরণের অর্থ দিচ্ছে ফেসবুক, কারা পাবেন?

1 hour ago 2

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দিতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি শিকাগো বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই কিছু ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ পৌঁছাতে শুরু করেছে।

২০০৭ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল। এই তথ্যগুলো মূলত রাজনৈতিক ও বিজ্ঞাপনমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং থার্ড পার্টির কাছে তথ্য যাওয়ার ওপর পর্যাপ্ত নজর রাখতে না পারায় ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। 

এরপর ২০১৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালতে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা ও ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ৭২৫ মিলিয়ন ডলারে আপস করার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে মামলাটি বিচার পর্যন্ত না গড়িয়ে সমঝোতায় শেষ হয়। 

যদিও মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। সব ঝামেলা কাটিয়ে অবশেষে এবার ব্যবহারকারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হয়েছে।

ক্ষতিপূরণের টাকা কারা পাবে?

ক্ষতিপূরণের পাকা পাচ্ছেন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। যাদের ২০০৭ সালের ২৪ মে থেকে ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে একটি সক্রিয় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ছিল তারা পাবেন এই অর্থ। এমনকি, যদি এই সময়ে অ্যাকাউন্ট ছিল কিন্তু বর্তমানে নেই, তবেও আবেদন করার সুযোগ ছিল। মূলত যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এবং আবেদন করেছেন, তারা এই ক্ষতিপূরণ পাবেন। অন্যকোনো দেশের ব্যবহারকারীরা, যেমন বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ, এই ক্ষতিপূরণ পাবেন না।

কত টাকা পাবেন ক্ষতিগ্রস্তরা?

ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে। প্রথমে মোট মীমাংসা তহবিল থেকে আইনি ও প্রশাসনিক খরচ বাদ দেওয়া হবে। বাকি অর্থকে ‘নেট তহবিল’ হিসেবে গণনা করা হবে।
এই তহবিল থেকে বিতরণের জন্য একটি পয়েন্ট সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। যতো দীর্ঘ সময় ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার করেছেন, প্রতি মাসের জন্য তাকে একটি পয়েন্ট দেওয়া হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ ১০ বছর ধরে ফেসবুক ব্যবহার করেছেন, তাহলে তিনি ১২০ পয়েন্ট পাবেন। পয়েন্ট যত বেশি, ক্ষতিপূরণ তত বেশি। 

প্রাপ্ত অর্থ সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পেপ্যাল, ভার্চুয়াল প্রিপেইড মাস্টারকার্ড, ভেনমো অথবা চেকের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

এবারের এই ক্ষতিপূরণ, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে সচেতনতার গুরুত্বকে আরও জোরালোভাবে প্রমাণ করল।
 

Read Entire Article