১৪, ৩, ০—ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের পারফরম্যান্স। ৫.৬৬ গড়ে মোট ১৭ রান! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আধুনিক এই যুগে একজন ওপেনারের এমন পারফরম্যান্স নিশ্চিতভাবেই সমালোচনার খোরাক যোগাবে। কিন্তু যদি কথা হয় নেতৃত্বের। তবে সেখানে দশে ১০ পাওয়ার মতোই ছাপ রাখতে পেরেছিলেন লিটন। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত চোটের জন্য দলের সঙ্গে যেতে পারেননি। ভারপ্রাপ্ত হয়েও দারুণভাবেই দলের নেতৃত্ব সামলেছেন লিটন। এতে স্বাগতিক উইন্ডিজকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে ধবলধোলাই করার পথ মসৃণ হয়েছে বাংলাদেশেরও। দাপুটে সিরিজ জয়ের পর লম্বা সময়ের জন্য নেতৃত্ব নিতেও আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী এই ব্যাটার।
দেড় বছর ধরেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ছন্দে নেই লিটন। সর্বশেষ ২৫ ইনিংসের মধ্যে মাত্র একটিতে ফিফটি ছুঁয়েছে তার ব্যাট। জাতীয় দলের হয়ে ৯৫টি ম্যাচ খেলা লিটনের রানের গড় মাত্র ২২.৪৪—তারপরও বিকল্পের অভাবেই দলে নিয়মিত সুযোগ মিলছে তার। যদিও এতো সুযোগ পাওয়ার পরও মাঠের পারফরম্যান্সে ছন্দ খুঁজে পাচ্ছেন না ডানহাতি এই ওপেনার। তারপরও বিসিবি চাইলে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন লিটন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘বিসিবি যদি আমাকে দায়িত্ব দেয় আমি করতে রাজি আছি। এখানে দ্বিমত থাকার কোনো কথা না। আমি এটা উপভোগ করছি।’
নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্ব আসার আগেও আলোচনায় ছিল লিটনের নাম। কিন্তু সে সময় নানা কারণে লিটনকে বাদ দিয়ে নাজমুলকে তিন সংস্করণের জন্য বেছে নিয়েছিল নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড। এক বছরের জন্য দেওয়া হয়েছিল নেতৃত্বের ভার। কিন্তু ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগেই নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করেছিলেন নাজমুল। এই আলোচনাও বেশ ভালোভাবেই হচ্ছিল দেশের ক্রিকেটে। পরে অবশ্য নতুন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজেও দেখা যাবে নাজমুলের নেতৃত্ব। কিন্তু চোটে তো আর খেলাই হয়নি তার। পরে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ভার পড়ে লিটনের কাঁধে। তিন ম্যাচের সিরিজে নেতৃত্বগুণ দেখিয়েছেন লিটন। এখন বিসিবির পক্ষ থেকে ভবিষ্যতের নেতৃত্বের জন্য চাওয়া হলে পাওয়াও যাবে—এমন সবুজ সংকেত দিয়ে লিটন বললেন, ‘এতদিন খেলার অভিজ্ঞতা থেকে আমি অনেক সিদ্ধান্ত নিই, বোলাররাও স্কিল দেখাচ্ছে, মাঠে আমার কাজ সহজ হয়ে যায়।’
কিন্তু সমস্যার জায়গাটা লিটনের ব্যাটের পারফরম্যান্স। একের পর এক সিরিজ খেলে যাচ্ছেন তিনি। অথচ ধারাবাহিকতা কিংবা ছন্দের ছিটেফোঁটাও দেখা মিলছে না তার ব্যাটে। পরিসংখ্যানও দিন দিন তলানীতে গিয়ে ঠেকতেছে। এর থেকে উত্তরণের উপায় কি! হয়তো লিটনের ভালোই জানা আছে। অন্যাথায় লিটনকে এটাও মনে করিয়ে দেওয়া যায় যে, বাংলাদেশের নিকট অতীতে বেশিরভাগ অধিনায়কই নেতৃত্ব পাওয়ার পর ছন্দ হারিয়ে নিজেকে খুঁজে বেড়িয়েছেন। চাপ নিতে না পেরে নেতৃত্বই ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক।