‘দেখা না দিলে বন্ধু কথা কইও না’- গানটির জনপ্রিয়তা নতুন করে বলার কিছু নেই। কোক স্টুডিও বাংলায় গানটি প্রকাশের পর এটি জনপ্রিয়তার নতুন মাত্রা পেয়েছে। আলোচনায় আসেন গানটির গীতিকার হাশিম মাহমুদও। বেশ অসুস্থ ছিলেন তিনি অনেকদিন ধরে। তার গান দিকে দিকে বাজলেও মিলছিল না তার দেখা।
অবশেষে তিনি এলেন প্রকাশ্যে, নতুন গান নিয়ে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে ফিরল কোক স্টুডিও বাংলাও। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর তৃতীয় সিজনের চতুর্থ গান ফিরেছে আয়োজনটি। প্রকাশ পেয়েছে ‘বাজি’ শিরোনামের গান। এই গান দিয়ে বলা চলে জমকালোভাবেই শুরু হলো এই সিজনের নতুন অধ্যায়।
‘সাদা সাদা কালা কালা’ খ্যাত শিল্পী ও গীতিকার হাশিম মাহমুদের লেখা এই গানে তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন গিটারিস্ট ও সংগীত পরিচালক ইমন চৌধুরী। গানের সংগীতায়োজন ও দৃষ্টিনন্দন ভিডিওতেও দেখা গেছে তাদের দুজনকে।
‘বাজি’ গানটি এক সাধারণ নারীর কোমল, নিষ্পাপ প্রেমের গল্পকে উপজীব্য করে গড়ে উঠেছে। এতে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজ সুর, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাদ্যযন্ত্র, আর বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গের অপূর্ব সংমিশ্রণ।
গানে আরও দেখা গেছে ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের ‘ধোয়া গান’ দলের পরিবেশনা। শত বছরের পুরোনো এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে এক নতুন আঙ্গিকে। বাজনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছেন বংশীবাদক কিয়ো উ প্রু মারমা এবং তার দাদি ম্রাকোইচিং মারমা, যিনি গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন নিজস্ব মারমা ভাষায়।
ইমন চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘‘বাজি’ আসলে ‘কথা কইও না’ গানের জবাব বলা যায়। ‘কথা কইও না’ ছিল মেয়েটির দৃষ্টিভঙ্গি আর এই গানটি ছেলেটির পক্ষ থেকে তার জবাব। আগের গানটিতে মৈমনসিংহ গীতিকা যুক্ত করা হয়েছিল। এবার জালাল উদ্দিন খাঁর একটি গান আমরা সুর করে যুক্ত করেছি ধোয়া গানের ঘরানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছি গানটির মাধ্যমে যেন বাংলাদেশের প্রতিটি রঙ, রূপ, সুর আর আত্মা ফুটে উঠে। পাহাড় থেকে সমুদ্র, নদী থেকে সমতল; সব মিলিয়ে যেন এটিই হয়ে ওঠে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।’
এর আগে কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় সিজনের সর্বশেষ গান ছিল ‘অবাক ভালোবাসা’। সেটি ২০২৪ সালের মে মাসে প্রকাশিত হয়েছিল ওয়ারফেজের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে।
এবার এলো ‘বাজি’। গানটি প্রকাশের পর বেশ সাড়া পেয়েছে। ইউটিউবের মন্তব্যের ঘরে দেখা যাচ্ছে প্রশংসার বন্যা। বিশেষ করে হাশিম মাহমুদকে দেখে তারা খুবই আনন্দিত।
এলআইএ/এমএস