ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতায় যশোরের অভয়নগরে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারি সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করা হলেও উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকার কিছু অংশ ধানচাষের উপযোগী হয়নি বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৪ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারণে এবার এক হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হচ্ছে না। যার মধ্যে প্রেমবাগ ইউনিয়নে একশ হেক্টর, সুন্দলী ইউনিয়নে ৯০০ হেক্টর, চলিশিয়া ইউনিয়নে ৪০০ হেক্টর, পায়রা ইউনিয়নে ৩০০ হেক্টর ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকায় ২০০ হেক্টর রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চারটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় জমে থাকা পানি কমতে শুরু করেছে। জলাবদ্ধ ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে এখনো ৭-১০ ইঞ্চি উচ্চতায় পানি রয়েছে। পৌর এলাকার ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি বিল ও আবাসিক এলাকায় ৩-৫ ইঞ্চি পরিমাণ পানি জমে রয়েছে।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সরখোলা গ্রামের জিয়াউর রহমান বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে এবার ৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস কোনো প্রকার সহযোগিতা করছে না। ভবদহের জলাবদ্ধতার অভিশাপ আমাদের মতো কৃষককে বিপদে ফেলে রেখেছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে কৃষি কাজ থেকে কৃষক অন্য কাজে চলে যেতে বাধ্য হবে।
চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের কামরুজ্জামান তরফদার বলেন, আমার ৭০ বিঘা কৃষি জমি এখনও জলাবদ্ধ। গত বছরের মাঘ মাসে ঘেরের মধ্যে ধান চাষ করেছি। এ বছর জলাবদ্ধতার কারণে বিলের ও ঘেরের মধ্যে ধান চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভবদহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারি সহায়তা না পেলে এক সময় তাদের সব সম্পত্তি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাবে। তাই কৃষকদের দাবি জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, জলাবদ্ধ এলাকাগুলো থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তারপরও বোরো ধান চাষে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। কারণ উপজেলা ও পৌর এলাকার এক হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করার প্রক্রিয়া চলছে। আগামীতে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তাদের সহযোগিতা করা হবে।
মিলন রহমান/এফএ/এএসএম