মানবপাচারের অভিযোগে বাংলাদেশি এক ট্রান্সজেন্ডার নারীকে গ্রেফতার করেছে ভারতের মুম্বাই পুলিশ। জানা গেছে, ‘গুরু মা’ নামে পরিচিত এই ব্যক্তি জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে মুম্বাইয়ে বসবাস করে আসছিলেন ও এখন পর্যন্ত তিনি ২০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশিকে ভারতে পাচার করেছেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অভিযুক্তের নাম বাবু আয়ান খান ওরফে জ্যোতি ও তিনি নিজেকে ‘গুরু মা’ নামে পরিচয় দিতেন। জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে ভারতে বসবাস করছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) তাকে গ্রেফতার করা হয়ে
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রায় ২০০ বাংলাদেশিকে ভারতে পাচার করেছেন। তবে তদন্তে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে মুম্বাই পুলিশ। এমনকি, অভিযুক্ত জ্যোতি পাচার হওয়া কিছু মানুষকে জোর করে যৌনকর্মে বাধ্য করতেন বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ বলছে, জ্যোতি বা ‘গুরু মা’ মুম্বাইয়ে ট্রান্সজেন্ডারদের আধ্যাত্মিক নেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় তার প্রায় ৩০০ অনুসারী রয়েছে। তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক প্রমাণ করতে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ, আধার কার্ড ও প্যান কার্ড তৈরি করেছিলেন। সম্প্রতি পুলিশ এসব কাগজ যাচাই করে জাল বলে নিশ্চিত হয় ও এরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এনডিটিভি বলছে, ‘গুরু মা’র নেতৃত্বে পরিচালিত পাচারচক্র বাংলাদেশের নাগরিকদের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করাতো। এরপর পাচারকৃতদের কলকাতায় কয়েকদিন রাখা হতো ও সেখানেই ভুয়া জন্মসনদ ও স্কুল ছাড়পত্র তৈরি করা হতো।
পরে তাদের মুম্বাইয়ে নিয়ে গিয়ে শিবাজি নগরের বিভিন্ন স্থানে রাখা হতো। সেখানে প্রতিটি ঘরে তিন থেকে চারজন করে থাকতেন ও সবাইকে মাসে ৫ থেকে ১০ হাজার রুপি করে ভাড়া দিতে হতো।
পুলিশের তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে, ‘গুরু মা’ মহারাষ্ট্র হাউজিং অ্যান্ড এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির আওতাধীন সরকারি ফ্ল্যাট ও বস্তি দখল করে ভাড়া দিতেন। তিনি অন্তত ২০০টিরও বেশি বাড়ি দখল করে রেখেছিলেন ও সেগুলো ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ রুপি আয় করেছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ