ভারতের বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসে কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ জারির পর বড় ধরনের রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধী ও ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতা এই পদক্ষেপকে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ ও স্বাধীনতার পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছেন।
হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য ও এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপাল করপোরেশনের (জিএইচএমসি) ১৫ ও ১৬ আগস্ট (স্বাধীনতা দিবস ও জন্মাষ্টমীতে) সব কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখার আদেশের তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ভারতের অনেক মিউনিসিপাল করপোরেশনই ১৫ আগস্ট কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। দুঃখজনকভাবে জিএইচএমসিও একই ধরনের আদেশ দিয়েছে। এটা অমানবিক ও অসাংবিধানিক। স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে মাংস খাওয়ার কী সম্পর্ক? তেলেঙ্গানার ৯৯ শতাংশ মানুষ মাংস খায়। এই নিষেধাজ্ঞা মানুষের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, জীবিকা, সংস্কৃতি, পুষ্টি ও ধর্মীয় অধিকারের লঙ্ঘন।
মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সাম্ভাজীনগরে একই ধরনের মাংস বিক্রির নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। তিনি বলেন, এভাবে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। বড় শহরে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের মানুষ থাকে। আবেগের বিষয় হলে মানুষ একদিন মেনে নিতে পারে, কিন্তু মহারাষ্ট্র দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসে যদি এমন আদেশ চাপানো হয়, তাহলে তা সমস্যার সৃষ্টি করবে।
মুম্বাইয়ের কাছে থানের কল্যাণ-ডোম্বিভলি মিউনিসিপাল করপোরেশনও একই নির্দেশ দিয়েছে। শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা আদিত্য ঠাকরে বলেছেন, মিউনিসিপাল কমিশনারকে বরখাস্ত করা উচিত এবং কে কী খাবেন তা নির্ধারণ করা তার কাজ নয়।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা দিবসে আমরা কী খাবো, সেটাই আমাদের অধিকার ও স্বাধীনতা। আমাদের বাড়িতে নবরাত্রিতেও প্রসাদে চিংড়ি ও মাছ থাকে, কারণ এটি আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের হিন্দুত্ব। কেন আমাদের ঘরে প্রবেশ করছেন? মিউনিসিপাল করপোরেশনের উচিত সড়কের গর্তের মতো আসল সমস্যায় মনোযোগ দেওয়া।
এদিকে, একনাথ শিন্ডে নেতৃত্বাধীন শিবসেনার মুখপাত্র অরুণ সাওয়ান্ত দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্রে বিজেপি-সেনা-এনসিপি জোট সরকার এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেনি। বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএসএম