ভারতে ২০ দিনের মেয়ে নবজাতককে মাটিচাপা, জীবিত উদ্ধার করলো পুলিশ

5 days ago 8

ভারতের উত্তরপ্রদেশে ২০ দিনের একটি মেয়ে নবজাতককে জীবিত মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুটি এখন স্থানীয় একটি হাসপাতালে জীবনের জন্য লড়াই করছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজ্যটির শাহজাহানপুর জেলায় মর্মস্পর্শী এই ঘটনা ঘটে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শিশুটিকে প্রথমে খুঁজে পান এক গবাদিপশু পালনকারী। তিনি তার ছাগলগুলো নিয়ে মাঠে ঘাস খুঁজতে গেলে মাটির নিচ থেকে কান্নার ক্ষীণ শব্দ শুনতে পান। কাছে গিয়ে দেখেন, মাটির মধ্য থেকে ছোট্ট একটি হাত বেরিয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি গ্রামবাসীকে খবর দেন ও একপর্যায়ে পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে।

শিশুটি বর্তমানে স্থানীয় সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নবজাতক বিশেষ পরিচর্যা ইউনিটে চিকিৎসাধীন। মেডিকেল কলেজের প্রধান ডা. রাজেশ কুমার জানান, শিশুটিকে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আনা হয়েছিল। মুখ ও নাকে মাটি ঢুকে যাওয়ার শিশুটি দম নিতে পারছিল না। কিছু পোকামাকড় ও সম্ভবত প্রাণীর কামড়ও লেগেছে তার শরীরে।

ডা. রাজেশ আরও জানান, প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুটির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও, পরে অবনতি ঘটতে থাকে ও সংক্রমণ দেখা দেয়। হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জনসহ চিকিৎসকরা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছেন।

তিনি জানান, শিশুটিকে সম্ভবত মাটিতে পুঁতে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছিল, কারণ তার ‘শরীরে ক্ষতের চিহ্নগুলো তাজা’ ছিল।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, শিশুটির মা-বাবাকে এখনো খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। রাজ্যের চাইল্ড হেল্পলাইনকেও এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।

শাহজাহানপুরে এমন ঘটনা নতুন নয়। ২০১৯ সালে একটি আগাম নবজাতক মেয়েকে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল; হাসপাতালে কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসার পর সে সুস্থ হয়েছিল।

এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করেনি। তবে ভারতের সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেয়েদের প্রতি বৈষম্য ও কন্যাশিশু হত্যা বা পরিত্যাগের অনেক ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনা মূলত ছেলে সন্তানকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতার সঙ্গে যুক্ত।

ভারতে কন্যাশিশু হত্যার প্রথা দীর্ঘদিনের সামাজিক সমস্যা। বিশেষ করে দরিদ্র সম্প্রদায়ে মেয়েদের প্রায়ই আর্থিক বোঝা হিসেবে দেখা হয়।

দেশটির শিশু অধিকার কর্মীরা বলছেন, ‘পুত্রপ্রাধান্য’ প্রথার কারণে বহু কন্যাশিশু গর্ভেই বা জন্মের পর মারা যায়। ‘অবাঞ্ছিত’ কন্যাশিশুর বেশিরভাগই অবৈধ লিঙ্গ নির্ণয় ক্লিনিকের সাহায্যে গর্ভেই মেরে ফেলা হয়। তবে জন্মের পর শিশুর হত্যার ঘটনাও কম নয়।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

Read Entire Article