স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, একটা সময় জনসংখ্যার চেয়ে কৃষি জমির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। এখন কৃষি জমি কমেছে, জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে। এরপরও কৃষকরা ভালো উৎপাদনের মধ্য দিয়ে আমাদের একটি সন্তোষজনক পর্যায়ে রেখেছেন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) কৃষকের মিনি কোল্ড স্টোরেজ ও খামারি অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। সাভারের রাজালাখ এলাকায় হর্টিকালচার সেন্টারে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। এতে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম, টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি কাম হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক তালহা জুবাইর মাসরুর প্রমুখ।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ইটের ভাটায় কৃষি জমির টপ সয়েল নিয়ে কৃষি জমি নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। এটা যদি হতে থাকে তাহলে ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য অন্ধকার হয়ে যাবে। এটি যেন না হয় সে লক্ষ্যে কৃষি জমি রক্ষায় আমরা কৃষি জমি সুরক্ষা আইন করতে যাচ্ছি।
কম জমিতে অধিক ফলন, পচনশীল কৃষিপণ্য সংরক্ষণের বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদ ব্যবস্থাপনা কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে খামারি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। কৃষকের উৎপাদিত শাকসবজি, ফলমূল সংরক্ষণের জন্য মিনি কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ করা হয়েছে। সারা দেশে ১০০ মিনি কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ করা হবে। এ প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
- আরও পড়ুন
- দিনে ৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পোল্ট্রি খাতের সিন্ডিকেট
- দেশে প্রথমবারের মতো বনাঞ্চলের সীমানা চিহ্নিত করার কাজ শুরু
১০০ মিনি কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের মূল লক্ষ্য কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্যকে আধুনিক শীতল সংরক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সঠিক সময়ে বাজারে বিক্রি করা। এর ফলে মৌসুমি দামের উত্থান-পতন নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, ফসলের অপচয় রোধ হবে এবং কৃষকের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা কমবে। সরাসরি বাজারে তাদের পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রির সুযোগ কৃষকদের মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমিয়ে সামগ্রিক বাজার ব্যবস্থাকে সুসংহত করবে।
রাজালাখ হর্টিকালচার সেন্টারে এরই মধ্যে দুইটি মিনি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘরকে আধুনিক কোল্ড স্টোরেজে রূপান্তরিত করা হয়েছে, অপরটি কনটেইনারভিত্তিক এবং সোলার চালিত। বর্তমানে কৃষকরা টমেটো, শসা, লাউ, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, বেগুন, গাজর, ফুলকপিসহ নানার ধরনের শাকসবজি ও ফলাদি সংরক্ষণ করতে শুরু করেছেন। যার ফলে ফসলের গুণগতমান বজায় থাকবে এবং বাজারে সঠিক মূল্য অর্জনের সুযোগ বাড়বে।
কন্টেইনারে নির্মিত কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনে ব্যয় হবে ১৫ লাখ টাকা ও পাকা ভবনে ব্যয় হবে ৫ লাখ টাকা।
এছাড়া মাঠ পর্যায়ে কৃষকসহ অন্যান্য উপকারভোগীর উন্নত কৃষি সেবা প্রদানে ফসল উৎপাদন পরামর্শক হিসেবে ‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপটি জিওস্পেশাল প্রযুক্তিনির্ভর একটি স্মার্ট কৃষি অ্যাপ। ফলে কৃষক নিজ জমিতে দাঁড়িয়ে তাৎক্ষণিক সেই জমির জন্য উপযোগী ফসল, সার সুপারিশসহ অন্যান্য তথ্য সহজেই জানতে পারবেন। খামারি অ্যাপ বাংলায় প্রস্তুত করায় এটি সহজেই বোধগম্য এবং এর ব্যবহার পদ্ধতি কৃষকবান্ধব।
এনএইচ/কেএসআর/জিকেএস