ভুট্টা ক্ষেতে খাবারের সঙ্গে বিষ দিয়ে বন্যপ্রাণী হত্যার অভিযোগ উঠেছে ফারুক হোসেন নামে চুয়াডাঙ্গার এক কৃষকের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের দীননাথপুর গ্রামের নড়িতলামাঠে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বণ্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। পরে রাতে খুলনা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ফরেস্টগার্ড রাসেল মিয়া বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, ওই কৃষক বেশ কিছুদিন ধরে ক্ষেতে প্রাণীর খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে আসছিলেন। এতে মারা যাওয়া প্রাণীগুলো মাটিচাপা দেন এলকাবাসী। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
চুয়াডাঙ্গা বন বিভাগের কর্মকর্তা রাকিব উদ্দিন জানান, মাখালডাঙ্গা গ্রামের মসজিদপাড়ার নবীছদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন দীর্ঘদিন ধরে দীননাথপুর গ্রামের নড়িতলামাঠে ফসল চাষ করে আসছেন। উন্মুক্ত স্থানে বন্যপ্রাণী চলাচলের সময় তার ভুট্টা ক্ষেত দিয়েও চলাচল করে। প্রাণীরা ফসল নষ্ট করছে এমন চিন্তা করে মাঠের বিভিন্ন স্থানে খাবারের সঙ্গে নিষিদ্ধ বিষ দিয়ে রাখেন। এতে বন্যপ্রাণীরা মারা যেতে থাকে। এরইমধ্যে ৫-৭টি শেয়াল, একটি গন্ধগোকুল, একটি বেজি, একটি পোষা কুকুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী মারা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, ফরেস্টগার্ড রাসেল মিয়া বাদী হয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। বনবিভাগ সহায়তা চাইলে একটি টিম পাঠানো হবে। প্রাণী হত্যা করা অপরাধ। কেউ অন্যায়ভাবে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে না।
পরিবেশবাদী সংগঠন পানকৌড়ি’র প্রতিষ্ঠাতা বখতিয়ার হামিদ বলেন, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি বিষ প্রয়োগ করে প্রাণীগুলো হত্যা করা হয়েছে। প্রাণী হত্যা বণ্যপ্রাণী আইনে অপরাধ। আমরা চাই অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।
খুলনা বণ্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বণ্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য বলেন, খবর পেয়ে রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এসময় প্রায় ৮-১০টি প্রাণীর মরদেহ ঘটনাস্থলে পাই। এর প্রেক্ষিতে সাধারণ ডায়েরি করেছি।
হুসাইন মালিক/এফএ/জিকেএস