ভুয়া আসামি দাঁড় করিয়ে জামিন, ৪ জনের নামে মামলা দিলেন বিচারক

3 hours ago 3

লক্ষ্মীপুরে ভুয়া ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে প্রবাসে থাকা আসামিদের জামিন নেওয়ার ঘটনায় জড়িত আইনজীবীর সহকারীসহ চারজনের নামে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইসমাইল এ নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে মুচলেকা দিয়েছেন আসামিদের আইনজীবী লুৎফুর রহমান রহিম গাজী। ভবিষ্যতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবে না বলে মুচলেকা দেওয়ায় আইনজীবীকে ক্ষমা করেন আদালত।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আব্দুল আহাদ শাকিল পাটোয়ারী জানান, আইনজীবী সহকারী ও জামিনের মামলার তদবিরকারকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলার বাড়ি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল বাদী হয়ে মামলাটি করবেন। অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তদের আটক বা গ্রেফতারে কোনো আদেশ দেয়নি আদালত। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইনজীবী আদালতে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। এতে আদালত তাকে ঘটনা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন আইনজীবী সহকারী আবুল কাসেম, জামিনের তদবির কারক আনোয়ার হোসেন তদবির কারক, জামিনপ্রাপ্ত ভুয়া আসামি সাইফুল ওরফে গাল কাটা সাইফুল ও ফরহাদ।

ভুয়া আসামি দাঁড় করিয়ে জামিন, ৪ জনের নামে মামলা দিলেন বিচারক

আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের সোন্দড়া গ্রামের আবদুল খালেকদের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে তাজুল ইসলাম খোকাদের জমিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা হয়। ২০২৪ সালের ১৯ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান আদালতে ৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তারা হলেন, তাজুল ইসলাম খোকা, সজীব, আনোয়ার হোসেন ও সাইফুল ইসলাম শুভ। এদিকে ঘটনা পর আসামি সজিব সৌদি আরব ও সাইফুল কাতার চলে যায়।

অন্যদিকে গেল বছরের ৩০ জুন আসামি খোকা ও আনোয়ার জামিন নেয়। তখন সজিব ও সাইফুলের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। আসামিরা বিদেশে রয়েছেন। কিন্তু গত ৬ নভেম্বর মামলার ২ ও ৪ নম্বর আসামির স্থলে ভিন্ন ব্যক্তিদের রামগঞ্জ আমলি আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে আদালত তাদের জামিনে মুক্তির আদেশ দেন। তবে আদালতে উপস্থিত করা ভুয়া ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঘটনাটি জানতে পেরে গত ৮ ডিসেম্বর বাদী শামছুর নেছা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি সজিব ও সাইফুলকে সশরীরে হাজির হওয়ার জন্য ও তাদের জামিনের আদেশ বাতিল করতে আবেদন করে। একইসঙ্গে আসামিদের নিযুক্ত কৌঁসুলি ও স্থানীয় জামিনদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা জানিয়েছেন। এতে আদালতের বিচারক ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চায়। পরে ২৯ ডিসেম্বর আসামিদের আইনজীবী রহিম গাজী আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দেন। একই ব্যাখ্যা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে দিয়েছেন।

এতে তিনি জানান, আইনজীবী সহকারী আবুল কাশেম দুজন লোককে এনে আসামি হিসেবে আদালতে উপস্থিত করায়। পরে তাদের জামিন করানো হয়। তিনি আসামিদের ছিনতেন না।

কাজল কায়েস/আরএইচ/এমএস

Read Entire Article