ভুয়া মামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

2 weeks ago 13

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, অনেক ভুয়া মামলা হচ্ছে। সকল ভুয়া মামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো দোষীকেও ছাড় দেওয়া হবে না এবং নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। 

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। আইডি শো করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তেলবাজি বন্ধ করতে হবে। কোন সরকার ভবিষ্যতে আসবে সেদিকে খেয়াল রাখবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দলকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই।

মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কোনো নিরাপরাধ যেন শাস্তি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দিত। এতে ১০ জনের নাম আর ২০০-৩০০ জন বেনামি। এখন পুলিশের থেকে চলে গেছে সিভিলে। এখন মামলায় ১০ জনের নাম থাকে আর বাকি ২০০-৩০০ জন বেনামী। যারা দোষী নয় তাদের নাম দিয়ে তদন্ত কাজ কঠিন করে ফেলা হচ্ছে। অনেক ভুয়া মামলা হচ্ছে। সব ভুয়া মামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো দোষীকেও ছাড় দেওয়া হবে না এবং নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। কিন্তু অভিযানে এখনো আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এই অস্ত্রগুলো যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার করতে হবে। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের মধ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন জায়গায় মব জাস্টিসের সংখ্যা বেড়ে গেছে। অনেকে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। যে কারণে বিভিন্ন জায়গায় হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। যদি কেউ অন্যায় করে তাহলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। এটা বন্ধ করার জন্য জোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে এ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের পাশের দেশ মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে অনেক কিছু প্রচার করে। আপনারাই পারেন সত্য ঘটনা প্রকাশ করে প্রতিবাদ করতে। সত্য ঘটনা প্রকাশ করে তাদের মুখে চুনকালি দিতে পারবেন। যেখানে যা ঘটেছে সত্যিটা প্রকাশ করেন, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

কৃষি উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে কোনো ছাড় দেব না। তারা আমাদের কাছ থেকে বহু সুবিধা নিয়েছে। এরা এত সুবিধা নিয়েছে, এখন সুবিধা পাচ্ছে না বলেই তারা বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা করছে। এই সুবিধা আর দেওয়া যাবে না। সবকিছু লুট করে নিয়ে যারা ওপারে চলে গেছে তারা খুব আরাম আয়েশে আছে। তারা ওখান থেকে কিছু নির্দেশনা দিচ্ছে, আর আমাদের এখানে কিছু রয়ে গেছে তারা খুব লাফাচ্ছে। কিন্তু এই লাফানো খুব বেশিদিন বরদাস্ত করা হবে না। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা যেন বেশি বাড়াবাড়ি না করে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশের আইজিপি মো. বাহারুল আলম বলেন, আমি কিছুদিন আগে আইজিপির দায়িত্ব নিয়েছি। সবার আন্তরিক সহযোগিতা চাই। আপনাদের সহযোগিতার বলে বলীয়ান হয়ে এদেশে, সমাজে একটি স্থিতাবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আশা করি আমার এই পথচলায় আপনারা সহযোগী হবেন। সকলের কল্যাণ কামনা করি।

খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হকের সভাপতিত্বে সূচনা বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা নেভাল এরিয়া কামান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক, বিজিবি মহাপরিচালক জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। 

র‌্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান, ১০৫ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, ডিজিএফআই খুলনার কর্নেল জিএস সৈয়দ আসাদুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন।

Read Entire Article