ভূগর্ভের গভীরতম হোটেল ‘ডিপ স্লিপ’
ভূপৃষ্ঠের অনেক গভীরে নির্মাণ করা হয়েছে হোটেল। যেখানে কেউ চাইলেই রাত কাটাতে পারবেন। এমন অসংখ্য হোটেল আছে দুনিয়াজুড়ে।
এ প্রতিবেদনে ভূগর্ভের সবচেয়ে গভীরতম হোটেলের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যা মাটি থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৭৫ ফুট নিচে অবস্থিত।
যেখানে মানুষের বেঁচে থাকা বেশ কঠিন। সম্ভবত এ কারণেই এই হোটেলের নাম দেওয়া হয়েছে ডিপ স্লিপ। অদ্ভুত এই হোটেলটির অবস্থান যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের স্নোডোনিয়া পাহাড়ের নিচে একটি পরিত্যক্ত খনিতে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিকস টাইমস, বিবিসির মতো সংবাদমাধ্যম। এ ছাড়া উইকিপিডিয়াতেও এ নিয়ে তথ্য রয়েছে।
চারটি প্রাইভেট টুইন-বেড কেবিন ও একটি ডাবল বেডসহ একটি গ্রোটো রুম, একটি ডাইনিং এরিয়া নিয়ে গঠিত এই হোটেলটি। এই হোটেলটি অন্যান্য সব হোটেলের মতো না। এটি নির্মাণ করা হয় ভূগর্ভস্থ পরিত্যক্ত সিমোরথিন স্লেট খনির একটি অংশে।
এখানে রাত্রিযাপন করাটা অন্যান্য হোটেলে তুলনায় বেশ ব্যয়বহুল। পৃথিবীর উপরিভাগের আলো-বাতাস আর শব্দদূষণ থেকে যারা এক রাতের জন্য কিছুটা দূরে থাকতে চান, তাদের গুনতে হবে ৬৮৮ মার্কিন ডলার পর্যন্ত।
যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৬ হাজার টাকা। এই হোটেলে থাকতে হলে মোকাবিলা করতে হবে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ। কারণ ওই স্থাপনায় পৌঁছাতে প্রথমেই আপনাকে মাটির অতলে একটি খাড়া চ্যালেঞ্জিং পথ অতিক্রম করতে হবে।
জানা যায়, ডিপ স্লিপ হোটেলটি ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে আউটডোর অ্যাক্টিভিটি কোম্পানি গো বিলো উদ্বোধন করেন। হোটেলটি সাধারণত খোলা থাকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত। হোটেলটিতে প্রবেশ করার পুরো জার্নিতে পাহাড়ের মধ্য দিয়ে ৪৫ মিনিটের জন্য ট্রেক করেন। এরপর অতিথিরা একটি ছোট কুটিরে ওঠেন। যার তলদেশেই অবস্থিত এই হোটেলটি। প্রশিক্ষিত গাইডরা অতিথিদেরকে হোটেলটিতে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে থাকেন। চ্যালেঞ্জিং রুটটিতে রয়েছে পুরোনো সিঁড়ি, পরিত্যক্ত ব্রিজ ও অসংখ্য স্ল্যাকলাইন। হোটেল কক্ষে পৌঁছাতে সময় লাগে ঘণ্টাখানেকের মতো।
হোটেলটিতে প্রবেশের পর অতিথিদেরকে একটি উষ্ণ পানীয় পান করানো হয়ে থাকে। এখানে খাবারের রয়েছে চমৎকার আয়োজন। নানান মুখরোচক খাবার, যেমন- চিকেন কিমা কারি, গ্রিন গাম্বো, পশ ব্যাকড বিনসহ আরও অনেক খাবারের স্বাদ পেয়ে থাকেন এখানকার অতিথিরা। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফল, মিষ্টিসহ চা-কফিরও আয়োজন করা হয়ে থাকে। মাটির এত গভীরে হলেও এখানে রয়েছে সার্বক্ষণিক পানি, বিদ্যুৎ এমনকি ওয়াইফাইয়ের সুবিধা।