ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তীব্র খাদ্য ও আশ্রয় সংকট

1 day ago 6

মিয়ানমারের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গত সপ্তাহের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশটিতে আশ্রয়, খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ভয়াবহ এ বিপর্যয়ে এখন পর্যন্ত ২,০০০-এরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, যার মধ্যে একটি স্কুলের প্রায় ৫০ জন প্রিস্কুল শিক্ষার্থীও রয়েছে।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে এ তথ্য জানা যায়। 

এর আগে শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরের দিকে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। এটি প্রাচীন প্যাগোডা থেকে শুরু করে আধুনিক ভবনগুলোকেও ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

মিয়ানমারের মান্ডাল এলাকায় একটি স্কুলধসে পড়ায় ৫০ জন প্রিস্কুল শিক্ষার্থী এবং দুজন শিক্ষক নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের মানবিক সাহায্য সংস্থা নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর জনগণ এখন তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে সংগ্রাম করছে। বিশুদ্ধ পানির অভাব, স্যানিটেশন সমস্যাসহ খাদ্য সংকট দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে।

অন্যদিকে, জরুরি উদ্ধারকারী দলগুলো জীবিতদের খুঁজে বের করতে এবং জীবনরক্ষাকারী সহায়তা দিতে নিরলস পরিশ্রম করছে। কিন্তু ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের কারণে অনেক এলাকায় সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, মান্ডালে এবং ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি এলাকাগুলোতে আশ্রয়, খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। সংস্থাটির একজন কর্মী জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর এখনো মানুষ আফটারশকের আতঙ্কে রয়েছে এবং তারা রাস্তায় বা খোলা জায়গায় রাত কাটাচ্ছে।

তিনি বলেন, তাঁবুর খুব বেশি প্রয়োজন, কারণ যাদের বাড়িঘর অক্ষত রয়েছে, তারাও ভেতরে ঘুমাতে ভয় পাচ্ছেন।

মিয়ানমারের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ২,০৬৫ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩,৯০০ জনেরও বেশি এবং অন্তত ২৭০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। দেশটির সামরিক সরকার সোমবার থেকে এক সপ্তাহের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে আহত ও গৃহহীনদের কাছে সহায়তা পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ভূমিকম্পের ফলে সেতু, রাস্তা ও অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি জান্তা সরকারের কঠোর যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণও ত্রাণ কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।

এদিকে, প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ধসে পড়া একটি বহুতল ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে জীবিত কাউকে পাওয়ার আশায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

Read Entire Article