ভেজালমুক্ত খেজুর গুড়ের উদ্যোক্তা তরুণ নার্স সিজান
তরুণ উদ্যোক্তা ও নার্স শাহরিয়ার সিজান মাগুরায় নিজবাড়িতে ভেজালমুক্ত খেজুর গুড় তৈরি করেন। রাজশাহীর অভিজ্ঞ গাছি দিয়ে রস সংগ্রহ ও খাঁটি খেজুরের গুড় প্রস্তুত করে সাড়া ফেলেছেন তিনি। সিজান মাগুরার ছয়চার গ্রামের খায়রুজ্জামান সবুজের ছেলে। জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করার সময় প্রতিদিন চোখে পড়তো ডায়রিয়া ও লুজ মোশনে আক্রান্ত শিশুদের ভিড়। বারবার একই সমস্যা দেখে বিষয়টি গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেন সিজান। অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশুর অসুস্থতার বড় একটি কারণ হলো বাজারের রাসায়নিক মিশ্রিত ভেজাল গুড় দিয়ে তৈরি পিঠা ও খাবার। নিজের গ্রামের নাম শুনলেই মনে পড়ে খাঁটি খেজুর গুড়ের কথা। সেই মাগুরাতেই সমাধান খুঁজে পান সিজান। ২০২৪ সালে নিজের অর্থ বিনিয়োগ করে মাগুরায় একটি খেজুর বাগান কেনেন তিনি। আনেন রাজশাহীর অভিজ্ঞ গাছি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে রস সংগ্রহ ও খাঁটি খেজুরের গুড় প্রস্তুত করতে শুরু করেন। খাঁটি খেজুর গুড় উৎপাদনের উদ্যোগ সহজ ছিল না। অনেকেই তাচ্ছিল্য করেছেন, দায়িত্বহীন মন্তব্যও করেছেন। তাতে সিজান পিছু হটেননি। দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। প্রথম মৌসুমেই তার তৈরি গুড় মানুষের আস্থা
তরুণ উদ্যোক্তা ও নার্স শাহরিয়ার সিজান মাগুরায় নিজবাড়িতে ভেজালমুক্ত খেজুর গুড় তৈরি করেন। রাজশাহীর অভিজ্ঞ গাছি দিয়ে রস সংগ্রহ ও খাঁটি খেজুরের গুড় প্রস্তুত করে সাড়া ফেলেছেন তিনি। সিজান মাগুরার ছয়চার গ্রামের খায়রুজ্জামান সবুজের ছেলে।
জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করার সময় প্রতিদিন চোখে পড়তো ডায়রিয়া ও লুজ মোশনে আক্রান্ত শিশুদের ভিড়। বারবার একই সমস্যা দেখে বিষয়টি গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেন সিজান। অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশুর অসুস্থতার বড় একটি কারণ হলো বাজারের রাসায়নিক মিশ্রিত ভেজাল গুড় দিয়ে তৈরি পিঠা ও খাবার।
নিজের গ্রামের নাম শুনলেই মনে পড়ে খাঁটি খেজুর গুড়ের কথা। সেই মাগুরাতেই সমাধান খুঁজে পান সিজান। ২০২৪ সালে নিজের অর্থ বিনিয়োগ করে মাগুরায় একটি খেজুর বাগান কেনেন তিনি। আনেন রাজশাহীর অভিজ্ঞ গাছি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে রস সংগ্রহ ও খাঁটি খেজুরের গুড় প্রস্তুত করতে শুরু করেন।
খাঁটি খেজুর গুড় উৎপাদনের উদ্যোগ সহজ ছিল না। অনেকেই তাচ্ছিল্য করেছেন, দায়িত্বহীন মন্তব্যও করেছেন। তাতে সিজান পিছু হটেননি। দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। প্রথম মৌসুমেই তার তৈরি গুড় মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়।
নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে সিজান বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সাফল্য খাঁটি গুড়ের ক্রেতা দেশের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। যারা প্রতিনিয়ত রোগীদের চিকিৎসা দেন। খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ে সবচেয়ে সচেতনরা নিশ্চিন্তে নিচ্ছেন আমার পণ্য। এটি আমার গুড় ও পাটালির গুণমানের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি।’
আরও পড়ুন
ঘাস থেকে গুড় তৈরি করে স্বাবলম্বী খাদিজা বেগম
ফিলিপাইনের আখ চাষে সফল কালীগঞ্জের মাসুদ
মাগুরা ছাড়িয়ে আশপাশের জেলায়ও সাড়া পড়েছে। শুধু ব্যক্তি পর্যায়েই নয়, মাগুরা ও আশপাশের কয়েকটি জেলার খ্যাতনামা মিষ্টির দোকানেও যাচ্ছে সিজানের তৈরি খাঁটি গুড়। ফলে একটি ছোট উদ্যোগ আজ স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
শুরুতে ছোট বাগান কেনার পেছনে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৩ লাখ টাকা। মাত্র ৩ মাসে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। এ বছর সিজান আরও বড় পরিসরে কাজ শুরু করেছেন। তার আশা, চলতি মৌসুমে ৪-৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ হবে। প্রতি কেজি ভেজালমুক্ত খেজুর গুড়ের পাটালি ৫৫০ টাকা, দানাগুড় ৪৫০ টাকা ও জোলাগুড় ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বর্তমানে তার সঙ্গে কাজ করছেন দাঁতের চিকিৎসক শেখ সালাউদ্দিন, দুজন রেজিস্টার্ড নার্স এবং বন্ধু রিজু বিশ্বাস। দলবদ্ধভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছেন খাঁটি গুড় মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে। শীতের তীব্রতা বাড়লে ঢাকায় স্টল দেওয়ার পরিকল্পনা আছে সিজানের। যাতে রাজধানীর মানুষও সহজেই পান খাঁটি, নিরাপদ, ভেজালমুক্ত খেজুর গুড়।
সিজান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি যে ভেজালমুক্ত খাবার খাওয়াতে পারছি, বিষয়টি আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। শিশুর সুস্থতার কথা ভাবলেই মনে হয় আমার প্রচেষ্টা সার্থক। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, যারা গুড় পাটালি কিনতে আসবেন; তারা খেতে পারবেন সকালের টাটকা সতেজ খেজুর রস।’
দাঁতের চিকিৎসক শেখ সালাউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে ভেজালের ভিড়ে আসল জিনিস খুঁজে পাওয়াই দুর্লভ। মাগুরায় এই প্রথম পাওয়া যাচ্ছে অর্গানিক গুড় ও পাটালি। দারুণ আইডিয়াটা সিজানের মাথায় প্রথম আসে। বর্তমানে গাছি, গুড় ও পাটালি উৎপাদন খুবই কষ্টসাধ্য। তার ভেতর দিয়েও সিজান এগিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে রস সংগ্রহ ও খাঁটি খেজুরের গুড় প্রস্তুত করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।’
মো. মিনারুল ইসলাম জুয়েল/এসইউ
What's Your Reaction?