ভেনেজুয়েলার ২ শতাধিক নাগরিককে এল সালভাদরের ‘ভয়ংকর কারাগারে’ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে তাদের বিতাড়িত করা হয়েছে।
সোমবার ( ১৭ মার্চ) বার্তসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ট্রাম্প প্রশাসন ভেনিজুয়েলার একটি গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্যকে বিতাড়িত করেছে। আদালত প্রশাসনের এ আদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সত্ত্বেও এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন আদালতের এই আদেশকে অমান্য করে জানিয়েছে, আদালতের এমন নির্দেশ দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই।
ভেনিজুয়েলার গ্যাং গ্রুপ ‘ট্রেন ডে আরাগুয়ার’ বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং চুক্তিভিত্তিক হত্যার মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গ্যাংয়ের ২০০ সদস্যকে দ্রুত বিতাড়িত করতে ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’-এর যুদ্ধকালীন ক্ষমতা ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। তবে, জজ জেমস বোয়াসবার্গ ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ব্লক করে আদেশ জারি করেন।
ট্রাম্প প্রশাসন আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে বিতাড়নের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট একটি বিবৃতিতে বলেন, একটি শহরের একজন জজ কোনো বিমানের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, বিশেষ করে যখন সেই বিমানে বিদেশি সন্ত্রাসীরা থাকে যাদের যুক্তরাষ্ট্রের মাটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আদালতের এই আদেশের কোনো আইনি ভিত্তি নেই এবং প্রেসিডেন্ট বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে ফেডারেল আদালতের সাধারণত কোনো এখতিয়ার নেই।
এই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ ব্যবস্থা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রতি ট্রাম্পের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ক্যাটো ইনস্টিটিউটের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও নাগরিক স্বাধীনতাবিষয়ক আইন বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক এডিংটন বলেন, হোয়াইট হাউস এই মুহূর্তে আদালতের ‘সরাসরি অবাধ্যতা’ দেখাচ্ছে। তিনি এটিকে গৃহযুদ্ধের পর আমেরিকার চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকালীন আইন প্রয়োগের কঠোর সমালোচনা করেছে ভেনেজুয়েলা। এক বিবৃতিতে দেশটি বলেছে, এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের অন্যায়ভাবে অপরাধী সাব্যস্ত করছে। এটি মানবতার ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার পর্ব হিসেবে পরিচিত দাসপ্রথা থেকে শুরু করে নাৎসি বন্দিশিবিরের ভয়াবহ স্মৃতিকে উসকে দিয়েছে।