ভ্রান্ত ইতিহাস বুদ্ধিজীবীর দায়

3 weeks ago 13

গণমাধ্যমে কাজ করেন ছাত্রসম কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে পেলে প্রায়শই আমি একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি: কখন ব্যক্তি সংবাদ হয়ে উঠেন? আমার দৃষ্টিতে ব্যক্তির কাজ যখন সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক প্রভাব রাখে তখন তা সংবাদ হয়। একজন বদিকে নিয়ে গণমাধ্যম তখনই সংবাদ ছাপে যখন তার ইয়াবা কারবার সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করে। একইভাবে মুসা ইব্রাহীম যখন মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন তখন কেবল ব্যক্তির অর্জন হিসেবে নয় বরং তা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগায় বলে তা সংবাদ হয়।

যদিও বাংলাদেশের অ্যাকাডেমিক পরিসরে এখনও সমালোচনা গ্রহণ করার মতো মানসিকতা তৈরি হয়নি। এখনকার অনেক বড় বড় নামকরা অধ্যাপক, লেখক, স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে মিশে দেখেছি তারা সব সময় প্রশংসা পছন্দ করেন। সমালোচনা করলে তারা রুষ্ট হন। এড়িয়ে চলেন। পরে সুযোগ পেলে ক্ষতি করেন। যদিও ভিনদেশি অ্যাকাডেমিশিয়ানদের চরিত্র ভিন্ন। আমার সঙ্গে অনেক পণ্ডিতদের বন্ধুত্ব হয়েছে যার সূচনা হয়েছিল তার কাজের সমালোচনার মাধ্যমে। উদাহরণ হিসেবে কিংস কলেজ’স লন্ডনের ইতিহাস বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান জন উইলসনের কথা বলা যায়। বেশ কয়েক বছর আগে তিনি বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির একটি সেমিনারে একটি গবেষণা প্রবন্ধ পড়েছিলেন। তার সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাতে আমি তার প্রবন্ধে উল্লিখিত কয়েকটি দাবির সমালোচনা করে বলেছিলাম তার দাবিগুলো ত্রুটিপূর্ণ। আমার বক্তব্য তিনি ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন এবং অ্যাকাডেমিক আলোচনার পরিসর এখনও জারি রেখেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের একজন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করায় তিনি আমাকে ফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে ব্লক করে দিয়েছেন। তাই সাধারণ বাংলাদেশি কারোর কোনো অ্যাকাডেমিকের কাজের সমালোচনা করার বিষয়ে আমার বরাবর অনীহা রয়েছে। কিন্তু এই প্রবন্ধটি লিখতে হচ্ছে কারণ সলিমুল্লাহ খান তরুণদের মধ্যে বেশ প্রভাব রাখেন এমন একজন ওয়াইজ বা বক্তা। তার অনুসারীর সংখ্যা অনেক এবং তাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ। তাই ব্যক্তি সলিমুল্লাহ খানকে আক্রমণ করা নয়, বরং তার আলাপের অ্যাকাডেমিক ডিসকোর্সের নিরিখে বিশ্লেষণ করাই এই লেখার একমাত্র উদ্দেশ্য।

দুই.
বেশ কয়েক বছর আগে করোনার মধ্যে ইউপিএল আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে সলিমুল্লাহ খানের বক্তব্য শোনার সুযোগ হয়েছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের পিএইচডি থিসিস বইরূপে প্রকাশিত হওয়ার পর ওই বইয়ের উপর ইউপিএল আলোচনার আয়োজন করেছিল। বিদেশি দুইজন অধ্যাপকসহ সলিমুল্লাহ খান আলোচক ছিলেন। বলতে দ্বিধা নেই সলিমুল্লাহ খানের বক্তব্য আমাকে মুগ্ধ করেছিল। তিনি বিদেশি ওই অধ্যাপকদের দাবিকে অ্যাকাডেমিকভাবে খারিজ করেছিলেন তা তরুণ শিক্ষক হিসেবে আমাকে বেশ অনুপ্রাণিত করেছিল। সলিমুল্লাহ খান আইনের ছাত্র ও শিক্ষক ছিলেন ফলে তার আইন বিষয়ে অ্যাকাডেমিক ওই বক্তব্য পণ্ডিত সমাজে গ্রহণযোগ্যও হবে।

কিন্তু তিনি যখন ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তখন ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে আমরা তার ওই বক্তব্যর সবলতা-দুর্বলতা সহজে উপলব্ধি করি। ওই উপলব্ধি বলছে তিনি ঐতিহাসিক বিষয়ে প্রায়শই বিতর্কিত দাবি করেন। অনেক সময় জনপরিসরে তার দাবি নানা বির্তকের জন্মও দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন সময়ে তিনি ভুল রেফারেন্স দেন। স্মৃতি থেকে বলায় এমন ভুল ভ্রান্তি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে তার ইতিহাস পাঠ ও বিভিন্ন সময়ের গবেষণা ও রেফারেন্সবিহীন দাবি আমাদের প্রায়শই বিভ্রান্ত করছে। এক্ষেত্রে অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যাবে। কিন্তু এই লেখার পরিসর সংক্ষিপ্ত রাখতে কয়েকটি প্রধান উদাহরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবো।

দুই একটি শব্দ বা বাক্য বলে অথবা ব্যক্তিগতভাবে দুই একজনের সঙ্গে কথা বলে মাদ্রাসা শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে বেশি মেধাবী- দাবি করার মতো অপরিপক্ব আচরণ করা সমীচীন নয়। এর মাধ্যমে আপাতত হয়তো আলোচনায় আসা যায়, কোনো কোনো শ্রেণি বা গোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয় হওয়া যায়। কিন্তু আখেরে তার মাধ্যমে জ্ঞানচর্চায় অবদান রাখা যায় না। একজন গবেষক, বুদ্ধিজীবী বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের উচিত চটকদার কথা বলে জনপ্রিয় হওয়ার চেয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞানচর্চায় ও তার প্রকাশে অধিক মনোযোগ দেওয়া।

১) ২০১৭ সালে শেখ হাসিনার কওমি মাদ্রাসার সনদকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে ওকালতি করতে গিয়ে তিনি টকশোতে দাবি করেন “ইংরেজি শিক্ষার শিক্ষকদের চেয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকরা মেধাবী।” (দৈনিক ইনকিলাব: ১৭ এপ্রিল ২০১৭)। তিনি আরও দাবি করলেন, “দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন অধ্যাপকও পাবেন না যে তাদের সঙ্গে (মাদ্রাসার শিক্ষকদের সঙ্গে) যুক্তি-তর্কে পারবেন।” (দৈনিক ইনকিলাব: ১৭ এপ্রিল ২০১৭)। অবশ্যই যে কেউ যে কারোর চেয়ে বেশি মেধাবী-কম মেধাবী হতে পারেন, যুক্তি-তর্ক জানতে পারেন। কিন্তু সেই দাবির জন্য উপর্যুক্ত গবেষণা চাই। কিন্তু তিনি কোনো গবেষণা ছাড়াই কয়েকজন মাদ্রাসার শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেই হাজার হাজার শিক্ষকদের মধ্যে তুলনা করেন। কোনো গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল ছাড়া জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশ্য এমন দাবি করা যায় না। ওই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি শুধু কয়েক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও হাজার হাজার ইংরেজি মাধ্যমে পডুয়া শিক্ষকদের শুধু এক একথায় হেয় করেননি; বরং মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নতির পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। সরকার বাহাদুরের কাছে এই বার্তা যায় যে মাদ্রাসা শিক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অথবা বুয়েটের শিক্ষার চেয়েও মানসম্মত। সুতরাং তার আর নতুন করে উন্নয়নের জন্য অর্থ খরচ করা দরকার কি!

২) ইতিহাস বিষয়ে তিনি প্রায়শই চটকদার দাবি করেন। ইদানীং নিজেকে অতি জুলাই বিপ্লবী প্রমাণ করতে গিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ঐতিহাসিক বিকৃত তথ্য প্রচার করছেন। তিনি দাবি করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিদের কাছে ধরা দিয়েছেন, আত্মসমর্পণ করেছেন। এটি নতুন কোনো আলাপ নয়, শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অবদান নেই বলে যারা প্রমাণ করতে চান তারা স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই এমন ঢোল বাজাচ্ছেন। সলিমুল্লাহ খান কেবল সেই ঢোল বর্তমানে আবারও পেটালেন। যদিও প্রকৃত ইতিহাস হচ্ছে, ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছিল। ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করার ইতিহাসের বিবরণে “ধরা দেওয়া” ও “আত্মসমর্পণ করা” শব্দ ব্যবহার স্পষ্টত্ব ইতিহাসের বিকৃতি। অবশ্যই সলিমুল্লাহ খান উত্থাপিত এই প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতে পালিয়ে না গিয়ে কেন গ্রেফতার হলেন (সলিমুল্লাহ খানের ভাষায়: “ধরা দিলেন”)? এই প্রশ্নের উত্তর বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। তবে এক কথায় বলা যায়, উনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসের মধ্যে ওই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যেতে পারে। তখনই প্রমাণ হয় যে, জনতার মাঝে আন্দোলন সংগ্রামে উপস্থিত মুজিবের চেয়ে জেলবন্দি মুজিব বেশি শক্তিশালী ছিলেন।

তিন.
সলিমুল্লাহ খান তার সাক্ষাৎকার ভিত্তিক বই বাংলাদেশ: পঞ্চাশ বছর পর-এ দাবি করেছেন যে “বঙ্গ ছিল এইটাই-পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ ফরিদপুর-ঢাকা এই অঞ্চল।” তিনি বলেননি এটি কোন বঙ্গ। বঙ্গ জনপথ নাকি বঙ্গ রাজ্য? বঙ্গ জনপথের কথাই যদি ধরি তাহলে তা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মিলিন্দপনহো প্রদত্ত তথ্যে বঙ্গের অন্তর্গত এলাকা সমুদ্রতীরবর্তী ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, “প্রথম খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে প্রথম খ্রিস্টাব্দকালে লিখিত জৈন উপাঙ্গ পন্যবণাতে তাম্রলিপিপ্তকে (তমলুক, মোদিনীপুর জেলা) বঙ্গের অন্তর্গত হিসেবে দেখানো হয়েছে।” (বাংলাপিডিয়া)। Jyotir Mitra তাঁর “The Geographical Data of The Kasyapa Samhita” প্রবন্ধে বলেন, বঙ্গ পাঁচ ভাগে বিভক্ত: ১) পুন্ড্র বা উত্তর বঙ্গ, ২) সমতট বা পূর্ব বঙ্গ, ৩) কর্ণসুবর্ণ বা পশ্চিম বঙ্গ, ৪) তামলিপ্তি বা দক্ষিণ বঙ্গ এবং ৫) কামরূপ। সুতরাং বঙ্গ জনপথ যে কেবল ফরিদপুর-ঢাকা অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না তা প্রচলিত ঐতিহাসিকদের বয়ানেও পাওয়া যায়। অন্যদিকে বঙ্গরাজ্য যা সেন শাসক লক্ষণ সেনের সময় ছিল বলে তবকাত নাসিরি গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে , যদিও এখনও পর্যন্ত ওই বঙ্গরাজ্য যা লক্ষণ সেনের অধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ হিসেবে শাসিত হয়েছে তার সীমানা চিহ্নিত হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, বঙ্গের প্রকৃত সীমানা ও অবস্থান ঐতিহাসিক মীমাংসিত বিষয় নয়। ঐতিহাসিক গবেষণায় এই বিষয়ে এখনও বির্তক চলমান তাই এক কথায় কোনো দাবি করা এখনই সম্ভব নয়। তাই এই বিষয়ে সলিমুল্লাহ খান কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই, কোনো গবেষণা ছাড়াই মীমাংসিত দাবি করায়, বঙ্গকে নিদিষ্ট সীমানায় আবদ্ধ করায় প্রকৃতপক্ষে ঐতিহাসিক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, যা তার মতো একজন বক্তার নিকট থেকে কাম্য নয়।

অন্যদিকে সলিমুল্লাহ খান দাবি করেছেন, ইটন ধরে নিয়েছেন যে ঢাকায় মোগলদের আগমনের পূর্বে ঢাকায় মানুষের কোনো বসবাস ছিল না। যদিও ইটন তার বইয়ে এমন কোনো কথা বলেননি। ঢাকা সম্পর্কে ইটন কি বলেছেন তা উল্লেখ করছি, মোগল অফিসারদের উদ্ধৃতি দিয়ে ইটন ঢাকাকে একটি প্রাচীন দুর্গ বলে অভিহিত করেছেন। তার ভাষায়: “To be sure, the Mughals did not create the city ex nihilo. Since at least the mid fifteenth century, it had been an outpost of Muslim settlers, and one Mughal officer remarked that Dhaka, together with Gaur, Rajmahal, and Ghoraghat, had been among Bengal’s "ancient forts."

ইটনের এই দাবি থেকে স্পষ্টত বোঝা যায় ঢাকায় বসতি ছিল প্রাচীন কাল থেকে। মোগলদের ঢাকায় বসতি স্থাপনের পূর্ব থেকে তো অবশ্যই। সলিমুল্লাহ খান আরোও দাবি করেছেন, ইটন নাকি বলেছেন যে, মোগল সাম্রাজ্যের পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতার ফলে বাংলায় ইসলামাইজেশন হয়েছে। সলিমুল্লাহ খানের এই দাবিও বিভ্রান্তিতে ভরা। কারণ ইটন স্পষ্ট করে বলেছেন যে, মোগলরা অফিসিয়ালি সাধারণ মানুষকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিতকরণকে উৎসাহ দেননি। ইটনের ভাষায়: "the Mughal did not officially encourage conversion to Islam among the general population." অন্যদিকে পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়ে ইটন কোনো মন্তব্য করেননি। তাই এক্ষেত্রে ইটনের না বলা কথা সলিমুল্লাহ খান কোথায় পেলেন?

প্রকৃতপক্ষে ইটন বাংলায় ইসলামিকরণ বিষয়ে যা বলেছেন তা হলো, সুলতানি এবং মোগল আমলে (১৩৪২-১৫৯৯) খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে [বাংলায়] যে সাংস্কৃতিক সমন্বয় ঘটে তা ইসলামীকরণে ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে সুলতানি এবং মোগল উভয় আমলের দায়/অবদান/ভূমিকা আছে। ইটনের ভাষায়: “Certainly, the cultural accommodation achieved during the two and a half centuries between 1342 and 1599 contributed to the ultimate Islamization of the delta.”

পরিশেষে, সলিমুল্লাহ খানের ঐতিহাসিক আলোচনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ফলে তরুণ প্রজন্ম ভ্রান্ত ইতিহাস শিখছে। তার মতো পণ্ডিত ব্যক্তিদের তরুণরা অনুসরণ করেন বিধায় তাদের পাবলিক স্পিকার হিসেবে আরও সতর্ক হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। চটকদার ক্লেইম করে নিজেকে আলোচনায় রাখার চেয়ে জরুরি হচ্ছে ইতিহাস অনুসন্ধান করা এবং তার মাধ্যমে সত্যের সন্ধান করা। আর কোনো বিষয়ে ক্লেইম করলে তার তথ্যসূত্র ব্যবহার করা অথবা কোনো গবেষণালব্ধ জ্ঞান হলে গবেষণার উদ্দেশ্য-বিধেয় ও গবেষণা পদ্ধতিসহ পুরো গবেষণা প্রকাশ করা।

দুই একটি শব্দ বা বাক্য বলে অথবা ব্যক্তিগতভাবে দুই একজনের সঙ্গে কথা বলে মাদ্রাসা শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে বেশি মেধাবী- দাবি করার মতো অপরিপক্ব আচরণ করা সমীচীন নয়। এর মাধ্যমে আপাতত হয়তো আলোচনায় আসা যায়, কোনো কোনো শ্রেণি বা গোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয় হওয়া যায়। কিন্তু আখেরে তার মাধ্যমে জ্ঞানচর্চায় অবদান রাখা যায় না। একজন গবেষক, বুদ্ধিজীবী বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের উচিত চটকদার কথা বলে জনপ্রিয় হওয়ার চেয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞানচর্চায় ও তার প্রকাশে অধিক মনোযোগ দেওয়া।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

এইচআর/এএসএম

Read Entire Article