ভয়াবহ দূষণের কবলে দিল্লি, স্কুল ও নির্মাণকাজ বন্ধ ঘোষণা
বায়ুদূষণ বিশ্ববাসীর জন্য এক বড় সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এর পেছনে দায়ী করা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনসহ মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণ। অস্বাভাবিকভাবে বায়ুদূষণ বৃদ্ধিতে মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যুঝুঁকি বেড়েই চলেছে। বায়ুদূষণের কারণে প্রাইমারি স্কুল ও নির্মাণকাজ বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে দিল্লি।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে কুয়াশায় ছেয়ে দিল্লি। সকালে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ৪৯৮ স্কোর করে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শহর। ফলে বিভিন্ন এলাকায় দৃশ্যমানতাও কমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের অ্যাপ সামিরের তথ্যমতে, দিল্লির শীর্ষ পাঁচ দূষিত এলাকায় হলো জাহাঙ্গীরপুরি, বাওয়ানা, ওয়াজিরপুর, রোহিনি এবং পাঞ্জাবি বাগ। এ ছাড়া পালাম ও সাফদুরজংয়ে দৃশ্যমানতা ৫০০ থেকে ৪০০ মিটারে নেমে এসেছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, এখন সব প্রাইমারি স্কুল অনলাইনে পরিচালিত। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, বায়ুদূষণ রোধে কয়েকটি নির্দেশনা করেছে কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (সিএকিউএম)। এগুলো হলো অপ্রয়োজনীয় নির্মাণ ও ভাঙার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা। এ ছাড়া দিল্লি, গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, গাজিয়াবাদ এবং নয়ডাসহ কিছু এলাকায় বিএস-থ্রি পেট্রোল ও বিএস ফোর ডিজেলচালিত চার চাকার গাড়ি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কেবল জরুরি প্রয়োজনে ডিজেলচালিত জেনারেটরের ব্যবহার করা। এ ছাড়া নির্দেশিত মাত্রার নিচে থাকা জ্বালানিচালিত শিল্পকারখানাও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ধুলাবালির উড়াউড়ি রোধে সড়ক পরিষ্কার ও পানি ছিটানো এবং গণপরিবহন পরিষেবা বৃদ্ধি করা এবং অফ-পিক ভ্রমণে উদ্বুদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
ভারতের নারায়না হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি, হেপাটোলজি এবং লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সুকৃত সিং শেঠি বলেন, আমরা বায়ুদূষণের কারণে বেশ কয়েকটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালসহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। দূষিত বাতাসের ক্ষতিকারক কণা এবং গ্যাস শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এর ফলে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হতে পারে।
তিনি বলেন, এগুলো অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে এবং মাইক্রোবায়োমকে প্রভাবিত করে। ফলে আমাদের অন্ত্রে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া জমা হয়, যা আমাদের হজম, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।