ফরিদপুর ও মাগুরা জেলার মাঝদিয়ে বয়ে চলা মধুমতী নদীতে দেখা মিলেছে বিশালাকার কুমিরের। গত কয়েকদিন ধরে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভেসে বেড়াচ্ছে কুমির। কুমির ভেসে বেড়ানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এদিকে জনসাধারণের সচেতনতা ও সতর্কতার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে আগে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও পশ্চিমে মাগুরার মহম্মদপুর এলাংখালী ঘাট এলাকায় সেতুর দক্ষিণ পাশে কুমির দেখা যায়।
স্থানীয়রা ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এর আগে আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে মধুমতি নদীতে কুমির দেখা যায়।
প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন পরে জীবন্ত কুমিরের দেখা মিলেছে। অল্প কিছু সময়ের জন্য কুমির সেতু সংলগ্ন এলাকায় ভেসে থাকার সময় স্থানীয় এক যুবক সেটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এদিকে লোকালয়ের নদীতে কুমির দেখা দেওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মহম্মদপুরের মধুমতি নদীর সেতুর ওপর থেকে প্রায় এক মিনিট সাত সেকেন্ডের ভিডিওতে কুমিরটিকে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। দূর থেকে ছবি দেখে যেটুকু ধারণা করা যায় এটি একটি প্রাপ্তবয়স্ক কুমির। লম্বায় অন্তত ১৪-১৫ ফুট এবং যথেষ্ট স্বাস্থ্যবান। এরপর থেকে নদীর তীরবর্তী এলাকায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে মৎস্যজীবীরা নৌকা নিয়ে জাল ফেলতে নদীতে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
‘বোয়ালমারী অজানা গল্প’ নামের ফেসবুক পেজের এডমিন মো. শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মধুমতি নদীতে কুমির দেখা গেছে এটা সঠিক। আমাদের পেজের এক মডারেটর ভিডিও পেজে পোস্ট করলে মুহূর্তের মধ্যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। পরে আমি নিজেও বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে সঠিক বলে জানতে পেরেছি।
মহম্মদপুরের স্থানীয় বাসিন্দা মো. হানিফ জানান, বেশ কয়েকদিন ধরেই মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গড়াই নদী ও মহম্মদপুরে মধুমতি নদীতে কুমির দেখা যাওয়ার জনশ্রুতি চালু হয়।
বোয়ালমারীর ময়না গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষক মুকুল কুমার বোস জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনা সঠিক, এলাংখালী ঘাট এলাকায় সেতুর পাশে অনেকেই নিজ চোখে কুমির দেখেছে। ফেসবুকেও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
বোয়ালমারীর ময়না ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক মৃধা জাগো নিউজকে বলেন, লোকমুখে শুনেছি। নদীর আশপাশের মানুষদের সতর্কতা করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, সরাসরি দেখা হয়নি। তবে লোকমুখে শুনেছি এবং ভিডিওতে দেখেছি। এ ঘটনার পর উপজেলার মধুমতি নদীর তীরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের জনসচেতনতার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনতার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। জনসাধারণের সতর্কতার জন্য আগামীকাল থেকে মাইকিং করা হবে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হবে।
এন কে বি নয়ন/এমএন/জিকেএস