আমাগে মাথা গোঁজার ঠাঁই ‘স্বপ্ন নগর’ ভাঙতে ভাঙতে চইলা যাইতাছে। এরম ভাঙতে থাকলে আমরা কোথায় যামু? আতংক নিয়ে বলছিলেন খুলনার রুপসা উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্প ‘স্বপ্ন নগর’-এর বাসিন্দা হুরি বেগম। তার মতো বহু পরিবার নদীভাঙন আতংক নিয়ে দিনাতিপাত করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনার রুপসা উপজেলায় ২০২০ সালে ভূমি-ঘরহীন পরিবারের মাঝে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা। এ প্রকল্পে নির্মিত ঘর এলাকার নামকরণ করা হয় ‘স্বপ্ন নগর’। ২৮৬টি পরিবারের ঠাঁই হয় এখানে। প্রকল্প নির্মাণের সময় আঠারোবেকী নদীর পাড়ে ৯০০ মিটার অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। হঠাৎ মধুমতীর পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার খেয়াঘাটের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বাঁধের প্রায় সাড়ে ৭০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অন্তত ৩০টি ঘর এখন ভাঙনের মুখে।
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, অস্থায়ী নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। বাঁধ দিলেও সেটি এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে প্রকল্পে আশ্রয় পেয়েছিলাম। এখন এ আশ্রয় হারালে আমাদের আবার পথেই থাকতে হবে’। আমরা একটু ক্ষেত-খামার শুরু করছি। ভালোই দিন কাটছিল। কিন্তু হঠাৎ নদীভাঙন আবার সবার মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, মধুমতীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েক দিনে অস্থায়ী বাঁধের কিছু অংশ বিলীন হয়ে গেছে। এখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের বাসিন্দারা ঘর হারানো ভয় নিয়ে রাত কাটাচ্ছেন।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সেলিম রেজা বলেন, আঠারোবেঁকী নদীতে ফের পানি বাড়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে ভাঙন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
রুপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকাশ কুমার কুণ্ড ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
মো. আরিফুর রহমান/আরএইচ/জেআইএম