ময়মনসিংহে শিবমন্দির থেকে চুরি হওয়া শিবলিঙ্গটি উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) মধ্যরাতে টাঙ্গাইল সদরের দাইন্যা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের শিবলিঙ্গটি উদ্ধার করে কোতোয়ালী মডেল পুলিশ। এ সময় চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম প্রশান্ত কর্মকার (৩৩)। তার বাড়ি টাঙ্গাইল সদরের থানাধীন বাগিল গল্পের বাজার (দাইন্না চৌধুরী) এলাকার মনোরঞ্জন কর্মকারের ছেলে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সাড়ে তিনটার দিকে নগরের কোতোয়ালি থানাসংলগ্ন ভাঙামঠ শিবমন্দির থেকে শিবলিঙ্গটি চুরি হয়। ওই সময় মন্দিরে কেউ ছিলেন না। মন্দিরটিতে শতবর্ষ পুরোনো দুটি শিবলিঙ্গ ছিল। এর মধ্যে একটি বড় ও একটি ছোট। এরমধ্যে ছোট শিবলিঙ্গটি চুরি হয়ে যায়। পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে শিবলিঙ্গটি মন্দির থেকে কাঁধে করে নিয়ে রিকশায় চড়ে এক যুবককে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
মন্দিরটির পুরোহিত দুলাল ভট্টাচার্য কালবেলাকে বলেন, দিনের পূজা শেষে রোববার দুপুর ১২টার দিকে আমি বাসায় চলে যাই। বেলা ২টার দিকে এসে দেখেন মন্দিরের সব ঠিকঠাক আছে। কিন্তু বিকেল ৪টার পর মন্দিরে এসে দেখি ছোট শিবলিঙ্গটি নেই। পরে আশপাশের দোকানের সিসিটিভির ফুটেজ দেখা যায়, লাল গেঞ্জি ও জিনস প্যান্ট পরা এক যুবক কাঁধে শিবলিঙ্গ নিয়ে মন্দির থেকে বের হয়ে রিকশায় চড়ে চলে যান। তার এক হাতে লাল রঙের শপিং ব্যাগ ছিল। পায়ে জুতা ছিল না।
এ ঘটনায় রোববার সন্ধ্যার পর ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় মন্দিরের পুরোহিত দুলাল ভট্টাচার্য বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। সন্ধ্যায় খবর পেয়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশে উদ্ধারে অভিযান শুরু হয় এবং রাত সাড়ে আটটায় মামলা দায়ের করা হয়। এরপর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে একটি রিকশা ও রিকশার চালককে শনাক্ত করে।
কোতোয়ালী মডেল থানার সফিকুল ইসলাম খান বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলা দায়ের করার চার ঘণ্টা পর শিবলিঙ্গটি টাঙ্গাইল জেলার সদর থানার দাইন্না চৌধুরী বাগিল থেকে ঘটনায় জড়িত প্রশান্ত কর্মকারকে গ্রেপ্তার এবং তার হেফাজত থেকে চুরি হওয়া শিবলিঙ্গটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গটি প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক একজনকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ সময় ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, এসআই আনোয়ার ও অসিম উপস্থিত ছিলেন।