নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে একটি সারস পাখিকে বাঁচিয়েছিলেন মোহাম্মদ আরিফ। তারপর সেই পাখিটিকে সেবাশুশ্রুষা দিয়ে সারিয়ে তুলেছেন। এখন পুরোপুরি সুস্থ হলেও আরিফকে আর ছেড়ে যেতে চাইছে না সারস পাখিটি। উল্টো পাখিটি আরিফের পোষ মেনে গেছে। আরিফ যেখানে যায়, তার সঙ্গেই থাকে সারসটি।
ভারতের উত্তরপ্রদেশের আমেথি জেলার এক গ্রামের বাসিন্দা আরিফ। ২০২২ সালে ওই সারসকে উদ্ধার করেন তিনি। এরপর থেকেই সারসটি আরিফের নিত্যসঙ্গী। তার সঙ্গেই খায় আবার গোসলের সময় আরিফকে পাহারাও দেয়।
আরিফ নিজের বাইকে করে কোথাও গেলে সারস পাখিটিও তার সঙ্গে উড়ে উড়ে যায়। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, মাঝে মাঝে সারস পাখিকে ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে যান আরিফ। তার ভাষায়, পাখিটি তাকে দেখতে পেলেই অনুসরণ করে। একটি ক্ষেত থেকে আহত অবস্থায় পাখিটিকে পেয়েছিলেন আরিফ। তখন পাখিটির পা ভেঙে গিয়েছিল। তাই সেটি উড়তে পারছিল না।
অনেকটা মায়ায় পড়ে গিয়েই পাখিটিকে বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন আরিফ। বাড়িতে রেখেই পাখিটির পায়ের চিকিৎসা করান তিনি। প্রায় দেড় মাস পর পাখিটির পা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে। তখন থেকে পাখিটির দৌড়াদৌড়িতে আর কোনো সমস্যা নেই। অথচ আহতাবস্থায় সারসটিকে যখন পেয়েছিলেন আরিফ, তখন সেটির অবস্থা খুব খারাপ ছিল। কোনোভাবে তিনি পাখিটিকে বাসায় নিয়ে আসেন।
আহত সারস পাখিটিকে দেখে এগিয়ে গেলেও ভেতরে ভেতরে ভয় পাচ্ছিলেন আরিফ। কারণ পাখিটির অবস্থা তখন খুব খারাপ ছিল। আরিফের ভয় ছিল, এটি হয়তো তার ক্ষতি করবে। তবে সাহস নিয়ে এগিয়ে যান আরিফ। এর আগে নিজের বাসায় ছাগল ও মুরগির চিকিৎসা দেখেছেন তিনি। সারস পাখিটিকে ঠিক একইভাবে চিকিৎসা করেন আরিফ।
সারস বড়, লম্বা পা-বিশিষ্ট, জলাশয়ে বিচরণকারী পাখি। এই পাখিগুলোর গলা আর ঠোঁট সরু ও লম্বা এবং ডানা শক্তিশালী। ভারত উপমহাদেশ, উত্তর আমেরিকা, পূর্ব গোলার্ধ ও অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা এই আকর্ষণীয় পাখি। বিশ্বজুড়ে ১৫ প্রজাতির সারস রয়েছে। বাংলাদেশেও রয়েছে দুই প্রজাতির। বকের মতো দেখতে হলেও বংশগতভাবে বকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই সারসের।