মহানবির (সা.) ইসরা ও মেরাজ

2 days ago 9

ইসরা ও মেরাজ বিশ্বনবি মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)  জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও মুজিজা। এক রাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে প্রথম মসজিদুল আকসায় নিয়ে যাওয়া হয়, মসজিদুল আকসা থেকে উর্ধ্বজগত ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়। মক্কা থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত নবিজির (সা.) রাতের ভ্রমণ ইসরা নামে এবং মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে উর্ধ্বজগত ভ্রমণ মেরাজ নামে পরিচিত।

মক্কার কাফেরদের অসহযোগিতা, অত্যাচার নির্যাতনে মহানবি (সা.) তখন পর্যুদস্ত। অল্প সময়ের ব্যবধানে শ্রদ্ধেয় চাচা আবু তালিব ও প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজার (রা.) মৃত্যুতে শোকাহত ও অসহায় হয়ে পড়েছেন। এ রকম সময় এক রাতে জিবরাইল (আ.) তাকে বোরাকে চড়িয়ে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। তখনকার সাধারণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় মসজিদুল আকসায় যেতে কয়েক দিন লেগে যেতো।

কোরআনে সুরা ইসরায় এ ঘটনার বর্ণনা এসেছে এভাবে, আল্লাহ তাআলা বলেন, পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে নিয়ে গিয়েছেন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার আশপাশে আমি বরকত দিয়েছি, যেন আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (সুরা ইসরা: ১) 

এ আয়াত থেকে বোঝা যায় ইসরা ছিল মহান আল্লাহর এক অলৌকিক নিদর্শন ও ক্ষমতার প্রকাশ। তিনি রাতের বেলা তার বান্দাকে মক্কা থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে গিয়েছিলেন তার বিভিন্ন নিদর্শন দেখাতে। এ আয়াত থেকে আরও বোঝা যায় মসজিদুল আকসা সংলগ্ন অঞ্চল বরকতময়। 

আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মেরাজ বা উর্ধ্বাকাশে ভ্রমণের প্রসঙ্গ এসেছে কোরআনের সুরা নাজমে। আল্লাহ তাআলা বলেন, অবশ্যই তিনি (অর্থাৎ নবি (সা.)) তাকে (অর্থাৎ জিবরাঈলকে (আ.)) আরেকবার দেখেছিলেন। সিদরাতুল মুনতাহার (ষষ্ঠ বা সপ্তম আকাশে অবস্থিত একটি কুল গাছ) কাছে। যার কাছে জান্নাতুল মাওয়া অবস্থিত। যখন কুল গাছটিকে যা আচ্ছাদিত করার তা আচ্ছাদিত করেছিল (যার বর্ণনা মানুষের বোধগম্য নয়)। তার দৃষ্টি এদিক-সেদিক যায়নি এবং সীমাও অতিক্রম করেনি। নিশ্চয় তিনি তার রবের বড় কিছু নিদর্শন দেখেছেন। (সুরা নাজম: ১৩-১৮) 

এ আয়াতগুলো থেকে বোঝা যায়, মেরাজের রাতে নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ষষ্ঠ বা সপ্তম আকাশের অবস্থিত সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি জিবরাইলকে (আ.) তার আসল আকৃতিতে দেখেছিলেন। এ ছাড়া আল্লাহর আরও কিছু বড় নিদর্শন দেখেছিলেন যা আল্লাহ তাআলা তাকে দেখাতে চেয়েছিলেন। আল্লাহ যা দেখাতে চাননি তা তিনি দেখেননি বা দেখতেও চাননি। তার দৃষ্টি এদিক-সেদিক যায়নি এবং সীমাও অতিক্রম করেনি।

ওএফএফ

Read Entire Article