ময়মনসিংহের গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে টিনশেডের একটি জীর্ণ স্থাপনার মাটি খুঁড়ে দুটি পুরোনো সিন্ধুক পাওয়া গেছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এসব সিন্ধুক উত্তোলন করা হয়।
জানা যায়, মেঝেতে লোহার সিন্দুকের কিছু অংশ ভেসে উঠলে কার্যালয়ের লোকজন দেখতে পান। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় চারদিকে হুলুস্থুল পড়ে যায়। কারণ গৌরীপুর এলাকাটি একসময় জমিদার ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখলে ছিল। ফলে সিন্দুকে স্বর্ণালংকারসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু রয়েছে বলে ধারণা করেন স্থানীয়রা। পরে সোমবার দুপুরে মাটি খুঁড়ে প্রথমে একটি সিন্দুক পাওয়া যায়। পরে পাশে মাটি খুঁড়লে মেলে আরেকটি সিন্দুক। পরে এগুলো সবার সামনে খোলা হয়।
সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্র জানায়, ১৯১২ সালে সাবরেজিস্ট্রার অফিসটি প্রতিষ্ঠিত হয়। যে স্থানটি খুঁড়ে দুটি সিন্দুক পাওয়া গেছে, সেটি ব্রিটিশ আমলের তৈরি। এটি রেকর্ড রুম হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ১৯৮০ সালের পর ব্যবহৃত হয়নি। ধীরে ধীরে জরাজীর্ণ হয়ে ভেঙে পড়ছে।
দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসিবেশ বলেন, টিনশেডের জীর্ণ স্থাপনা ভেঙে সেখানে নতুন স্থাপনা নির্মাণের জন্য কাজ শুরু হবে। জীর্ণ স্থাপনাটির মেঝেতে লোহার সিন্দুকের কিছু অংশ দেখা যাওয়ায় হুলুস্থুল পড়ে যায়। পরে সেগুলো খুলে ১৯৮০ সালের একটি বায়নাপত্র দলিল, দুটি নোটিশ ও দুটি চাবি ও অব্যবহৃত সিল ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি।
এদিকে সিন্দুক পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন দেখতে আসেন। গৌরীপুর পৌর শহরের বাসিন্দা সারোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, গৌরীপুরে জমিদার বাড়ি রয়েছে। জমিদাররা পরিবার নিয়ে থাকতেন। এছাড়া অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তিও এই এলাকায় থাকতেন। রাজার আমলের সিন্দুকের সন্ধান মিলেছে জানতে পেরে দেখার আগ্রহ নিয়ে ছুটে আসি। যা ভেবেছিলাম তা হলো না। সিন্দুকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই।
স্থানীয় আজিজুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, সাবরেজিস্ট্রার, দলিল লেখক সমিতির নেতারাসহ স্থানীয় মানুষের উপস্থিতিতে শ্রমিকরা মাটি খুঁড়ে দুটি সিন্দুক তুলে। সিন্দুক খোলার আগ পর্যন্ত সবাই আগ্রহ সহকারে অপেক্ষা করছিল। হাতুড়ি ও শাবল দিয়ে ভেঙে সিন্দুক খুলে উল্লেখযোগ্য কিছুই পাওয়া যায়নি।
গৌরীপুর উপজেলার সাবরেজিস্ট্রার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সিন্দুক দুটি মাটি থেকে তোলা হয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কিছু পাওয়া যায়নি। দুটি সিন্দুক সংরক্ষণ করে রেখেছি।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এফএ/জিকেএস