মাদারীপুরে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় থমথমে ও পুরুষশূন্য এলাকা

1 day ago 6
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপের সংঘর্ষে বাবা ছেলেসহ তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুরো এলাকাই পুরুষশূন্য। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে দোষীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহতদের বাড়ি ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আব্দল মাবুদ। সেখানে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় পুলিশের এ কর্মকর্তা ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন।  মোহাম্মদ আব্দল মাবুদ আরও বলেন, ঘটনাটিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এভাবে তিনজন মানুষকে মর্মান্তিকভাবে হত্যা করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে বিষয়টি অনুধাবনের জন্য আসা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্ভব্য খুঁটিনাটি দেখা হচ্ছে। এদিকে শুক্রবার সকালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এখনও কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আধিপত্য বিস্তার আর স্থানীয় দ্বন্দ্বের জেরে শুক্রবার মাদারীপুরের বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারসহ তিনজনকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহতরা হলেন- মধ্যেরচর এলাকার মতিউর রহমান শিকদারের ছেলে আক্তার শিকদার (৪২), আক্তার শিকদারের ছেলে মারুফ শিকদার (২০) এবং খুনেরচর গ্রামের সিরাজুল চৌকিদার (৩৫)। আক্তার শিকদার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। আর সিরাজুল পেশায় কৃষক ও দিনমজুর ছিলেন। স্থানী ও নিহতের পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও একই ইউনিয়নের মেম্বার আক্তার শিকদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণেই এ তিনজন খুন হয়েছে। শুক্রবার ভোরে কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ীতে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানেও এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা আছে। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার সন্ধ্যায় নিহতদের মরদেহ দাফন করা হয়। বাজার-ঘাটে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ছে পুরো এলাকা। নিহত আতাউর রহমান ওরফে আক্তার শিকদারের বাবা মতি শিকদার বলেন, আমাদের বাড়িঘর কয়েকদিন আগে সুমন চেয়ারম্যানের লোকজন লুটপাট করে পুড়ে দেয়, আর সেই পোড়াবাড়ি দেখতে ঢাকা থেকে আসছিল আক্তার আর আমার নাতি মারুফ। তাদের ওপর হামলা করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সুমন ও তার লোকজন। আমার আর কোনো ছেলেও নাই, নাতিও নাই। আমার পুরো বংশ শেষ করে দিল। আমি এদের বিচার চাই। মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্তি পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Read Entire Article