মানবিক বিবেচনায় জামিন পেলেন সেই মা

2 hours ago 2

মানবপাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যাসন্তানসহ কারাগারে যাওয়া শাহজাদী বেগম এবং তার মা নার্গিস বেগমকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা মহানগর দায়রা আদালতের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার এই আদেশ দেন। জামিনের পর শাহজাদী ও তার ১২ দিনের কন্যাসন্তান হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগেরহাটের রামপাল এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ও ফকিরহাটের শাহজাদীর সংসারে চার কন্যা সন্তান ছিল। পরে আবারও অন্তঃসত্ত্বা হন শাহজাদী। তবে অনাগত সন্তান ছেলে না হলে বিচ্ছেদের হুমকি দিয়েছিলেন তার স্বামী। কিন্তু গত ১১ সেপ্টেম্বর শাহজাদী আবারও এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এ খবর শুনে স্বামী সিরাজুল ইসলাম হাসপাতাল থেকে চলে যান। এরপর থেকে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও রাখেননি।

এই পরিস্থিতিতে দিশাহারা শাহজাদীর মা নার্গিস বেগম গত ১৫ সেপ্টেম্বর একই হাসপাতালে জন্ম নেওয়া অন্য এক মায়ের ছেলে সন্তান চুরি করেন। সিসিটিভি ফুটেজ এবং পুলিশের তৎপরতায় সন্ধ্যায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় এবং নার্গিস বেগমকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় চুরি যাওয়া শিশুর বাবা মির্জা সুজন বাদী হয়ে শাহজাদী ও তার মায়ের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা করেন। এই মামলায় ২১ সেপ্টেম্বর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন, ফলে শাহজাদী তার নবজাতক কন্যাসন্তানসহ কারাবন্দী হন।

শাহজাদীর আইনজীবী শেখ রফিকুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশে দ্রুত জামিন আদেশ কারাগারে পাঠানো হয়।মানবপাচার মামলা আপসযোগ্য না হওয়ায় বিষয়টি কীভাবে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে আদালতসহ সবার পরামর্শ প্রয়োজন। শিশুটি অসুস্থ থাকায় মামলার শুনানি আগামী ২০ অক্টোবর ধার্য করা হয়েছে।

খুলনা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান জানান, জামিনের কাগজ হাতে পাওয়ার পর তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেন। অসুস্থ নার্গিস বেগমকে হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং শাহজাদী ও তার সন্তানকে মুক্তি দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মামলার বাদী মির্জা সুজন বলেন, তার ছেলে ফারহান এবং শাহজাদীর মেয়ে একই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিল। তার ছেলে বুকের দুধ না পাওয়ায় শাহজাদী তাকেও দুধ পান করাতেন। ওইদিন ফারহানকে কোলে নিয়ে শাহজাদী নিচে নামার পর হঠাৎ করেই শিশুটি নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন, পারিবারিক চাপ সামলাতে না পেরে শাহজাদীর মা নার্গিস বেগম শিশুটিকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন।

আরিফুর রহমান/কেএইচকে/এমএস

Read Entire Article