প্রতি বছরের মতো পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জের কৃষকেরা। অনুকূল আবহাওয়া আর উত্তম পরিচর্যায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয় ঢাকার প্রতিবেশী এই জেলায়। সাতটি উপজেলার প্রতিটি উপজেলাতেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ হয় পেঁয়াজের। তবে এবার আবাদ বেশি হাওয়ায় দাম নিয়ে চিন্তায় আছে কৃষক।
এরমধ্যে হরিরামপুর, শিবালয়, ঘিওর এবং সাটুরিয়া উপজেলায় পেঁয়াজের চাষাবাদ হয় সবচেয়ে বেশি। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর পেঁয়াজ আবাদে বেশি আগ্রহ কৃষকের। গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। পরিবারের পুরুষ সদস্যের পাশাপাশি পেঁয়াজের জমিতে কাজ করছে শিশুরাও।
জেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭ হাজার ৩৫ হেক্টর। এরই মধ্যে ১ হাজার ৩০৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। গত বছর জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ৭ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা করছেন তারা।
জেলার হরিরামপুর উপজেলার রাজারকলতা এলাকার কৃষক মো. হায়াত আলী বলেন, ‘প্রায় দুই যুগ ধরে নিয়মিত পেঁয়াজ চাষ করি।পেঁয়াজের জমিতে নিয়মিত যত্ন নিতে হয়। বিশেষ করে পানি ও সার জমিতে সময়মতো না দিলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় না। পেঁয়াজের বাজারদর নিয়ে প্রতি মৌসুমে কৃষকদের মাঝে হতাশা থাকলেও গত মৌসুমে পেঁয়াজের চড়া বাজারে খুশি কৃষক। তবে পেঁয়াজের দাম অতিরিক্ত কমে গেলে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে।’
একই গ্রামের আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘প্রতি বছর আমন ধান কেটে কিছু জমিতে সরিষা চাষ করতাম। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের আকাশ ছোঁয়া দাম দেখে বেশ আগ্রহী হয়ে চলতি মৌসুমে অন্য রবিশস্যের পাশাপাশি দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করবো বলে প্রস্তুতি নিয়েছি।’
ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের কৃষক ছবেদ বলেন, ‘প্রতি বিঘা জমিতে এ বছর পেঁয়াজ আবাদে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। প্রতি বিঘায় পেঁয়াজ চাষে খরচ হবে ৮০ থেকে ৯০ হাজার। এ বছর ৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করবো।’
মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মানিকগঞ্জে এ পর্যন্ত আবাদ সম্পূর্ণ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ১ হাজার ৩০৮ হেক্টর। গত বছর পেঁয়াজের মোট অর্জন ছিল ৭ হাজার ৩৫ হেক্টর। যেহেতু আবহাওয়া এখনো ভালো, আশা করি এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে। আমরা কৃষককে নতুন জাতের পেঁয়াজ চাষে উৎসাহিত করছি। কৃষকদের কিছু সার ও উন্নত জাতের বীজ দিয়ে সহযোগিতা করেছি।’
এসইউ/এএসএম