নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ খুলেছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আরেক নেতার। মেয়র হিসেবে তার ঐতিহাসিক বিজয় শুধু শহরের রাজনীতিতেই নয়, গোটা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিসরে এক নতুন ধারা তৈরি করেছে।
অনেক বিশ্লেষকের মতে, এই জয়ের মাধ্যমে মামদানি যুক্তরাষ্ট্রের প্রগতিশীল শিবিরের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ আলেক্সান্দ্রিয়া অকাসিও-কর্টেজ বা এওসি’র জন্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার পথ সুগম করে দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক পাবলো ও’হানার মতে, মামদানির বিজয়ের মূল রহস্য ছিল ‘দ্রুত পরিবর্তনের অনুভূতি তৈরি করা’, যা সাধারণ ভোটাররা কথায় নয়, কাজে দেখতে চান। মার্কিন ভোটাররা এখন দল নয়, বাস্তব পরিবর্তনের সন্ধান করছেন।
আরও পড়ুন>>
আমার মেয়র, তোমার মেয়র’/ বাংলা স্লোগানে বিজয় উদযাপন মামদানির
হুমকি-ধামকি, মিডিয়ার চাপ/ মামদানিকে ঠেকাতে ট্রাম্পের সব চেষ্টাই ব্যর্থ
বাস্তববাদী ইশতেহার, ভিন্নধর্মী প্রচারণা/ যেভাবে ভোটারদের মন জয় করলেন জোহরান মামদানি
মামদানি কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন?
২০২৪ সালের গ্রীষ্মে যখন জো বাইডেনের প্রথম বিতর্ক সম্প্রচারিত হচ্ছিল, তখন থেকেই ডেমোক্র্যাট শিবির বুঝতে পারে, তাদের মূল সমস্যা হলো ‘গতি’র অভাব। বাইডেন ও পরবর্তী প্রার্থী কমলা হ্যারিস অনেক কিছুই করেছেন, কিন্তু পরিবর্তনের প্রভাব ভোটারদের দৈনন্দিন জীবনে ততটা দৃশ্যমান হয়নি। ফলে হতাশ ভোটাররা বিকল্প হিসেবে আবারও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো বিতর্কিত ব্যক্তির দিকেই ঝুঁকেছেন।
ও’হানার মতে, ‘মানুষ শান্তি নয়, ধাক্কা চায়। তারা এমন কাউকে চায়, যে টেবিল উল্টে দিতে পারে।’
এই বাস্তবতায় মামদানির প্রচারণা ছিল নতুন ধরনের—‘ভাষণের’ চেয়ে ‘ফলাফলের’ রাজনীতি। তিনি ভাড়া, জীবনযাত্রার ব্যয়, এবং দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর মধ্য দিয়েই তিনি বামঘরানার রাজনীতিকে আবার সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরেছেন।
ও’হানার মতে, অকাসিও-কর্টেজ যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নামেন, তবে মামদানির প্রচারণা তার জন্য এক আদর্শ মডেল হতে পারে। তিনি তিনটি বিষয়কে মূল কৌশল হিসেবে তুলে ধরেছেন—
- তাৎক্ষণিক ফলাফল: নির্বাচনের পর ছয় মাসের মধ্যে তিনটি বড় প্রতিশ্রুতির বাস্তব ফল দেখাতে হবে।
- সংক্ষিপ্ত ও পরিষ্কার বার্তা: লম্বা বক্তৃতার চেয়ে সংক্ষিপ্ত, কার্যকর বার্তাই ভোটারদের মনে প্রভাব ফেলে।
- সুস্পষ্ট প্রতিপক্ষ নির্ধারণ: মামদানি যেমন বাড়িওয়ালা ও মূল্যবৃদ্ধিকারীদের দায়ী করেছেন, সেভাবে এওসি’কেও ‘খলনায়ক’ নির্ধারণ করে বাস্তব সমাধান দিতে হবে।
ও’হানা লিখেছেন, আজকের ভোটাররা প্রেমে পড়েন না, অধৈর্য হন। এওসি যদি ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তনের ছোঁয়া দিতে পারেন, তাহলে তার জন্য পথ প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, টেবিল কেউ না কেউ উল্টে দেবে—এবং ব্রঙ্কসের এক তরুণী, শ্রমজীবী, স্পষ্টভাষী নারী সেই কাজটি করতে পারেন বলেই মনে হয়।
সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
কেএএ/

8 hours ago
7









English (US) ·