মামলায় দোষী হয়েও যে কারণে নিঃশর্ত মুক্তি পেলেন ট্রাম্প

2 hours ago 6
যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হলেও আদালত নিঃশর্ত মুক্তি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এই মামলায় ট্রাম্পকে কোনো ধরনের শাস্তি বা দণ্ড দেওয়া হয়নি, যা তার রাজনৈতিক জীবন এবং ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে চুপ থাকতে ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ট্রাম্প ঘুষ দেন বলে অভিযোগ ওঠে। জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবসায়িক নথিপত্রে বিষয়টি গোপনও রাখেন ট্রাম্প।  এ ঘটনায় গত বছর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ এনে মামলা করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে সব অভিযোগেই ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। শুরু থেকেই এই মামলার সমালোচনায় মুখর ছিলেন ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা। তারা দাবি তুলেছিলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা মামলাটি ‘ভিত্তিহীন’ এবং এটি দ্রুত খারিজ করা উচিত। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) নিউইয়র্কের আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, যদিও ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তবে আদালত জানায়, ট্রাম্পকে শাস্তি হিসেবে কোনো দণ্ড, যেমন- কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড দেওয়া হবে না।  বিচারক হুয়ান মারচেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে প্রেসিডেন্টদের ফৌজদারি অপরাধ থেকে রক্ষা করার কথা বলা আছে, তাই ট্রাম্পকে কোনো শাস্তি প্রদান করা সম্ভব নয়। এর ফলে, ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন, যেটি তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত প্রেসিডেন্ট বানাবে। বিচারক হুয়ান মারচেন এ মামলাকে ‘বিশেষ মামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন, এর আগে আদালত কখনো এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি।  মামলার রায় ঘোষণার পর, ট্রাম্প এই মামলাকে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এবং এটি এক ধরনের বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার। এ ছাড়া, ট্রাম্প ফ্লোরিডা থেকে ভার্চুয়ালি আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং মামলাটি দ্রুত খারিজ করার দাবি জানিয়েছেন। রায়ের পর ট্রাম্প নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং জানান, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজেকে সাফাই জানানোর চেষ্টা করেছেন, পাশাপাশি দাবি করেছেন, এই মামলা মূলত তার পুনঃনির্বাচন ঠেকানোর জন্য একটি প্রচেষ্টা ছিল। এদিকে এই রায়ের পর ট্রাম্পের সামনে এখন আরও একটি সুযোগ রয়েছে—এটা হলো আপিল করার সুযোগ। তিনি আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পথ খুলে রেখেছেন, যার মাধ্যমে তিনি এই মামলা থেকে নিজের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করবেন। উল্লেখ্য, অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেও সংবিধানের কল্যাণে ট্রাম্প শাস্তি থেকে মুক্ত হয়েছেন এবং তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পথ সুগম হয়েছে। এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক এবং আইনগত ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে। সূত্র : ইউএসএ টুডে
Read Entire Article