লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সেনাপ্রধান জোসেফ আউন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরব এবং যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেনারেল আওনের পক্ষে সমর্থন সংগ্রহে কাজ করেছে। জেনারেল আওন যিনি ওয়াশিংটন এবং রিয়াদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সেনাপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জোসেফ বলেন, এটি লেবাননের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা।
তিনি তার বক্তব্যে লেবাননের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়া, তিনি দেশের অস্ত্রভাণ্ডার শুধু রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে থাকবে বলে ঘোষণা করেন, যা ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অস্ত্রভাণ্ডারের প্রতি একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য ছিল এবং এই নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসান হলো।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে জোসেফ আউনকে ৬৫ ভোট প্রয়োজন ছিল। তিনি এই সংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন এবং পার্লামেন্ট সদস্যদের উচ্ছ্বাসে পরিবেশ হয়ে ওঠে আনন্দময়।
এর আগে বুধবার ১২৮ আসনের পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে প্রথম দফায় তিনি প্রয়োজনীয় এক-তৃতীয়াংশ ভোট পাননি। প্রথম দফায় জোসেফ আউন ৭১ ভোট পেয়েছিলেন, যা প্রয়োজনীয় ৮৬ ভোটের চেয়ে ১৫ ভোট কম ছিল। এরপর দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের মেয়াদ ২০২২ সালের অক্টোবর শেষ হওয়ার পর থেকে এই পদ শূন্য ছিল। হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে বিরোধের কারণে আগের ১২ দফা ভোট ভেস্তে যায়। তবে, ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতির পর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পায়।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, দুই মাসের মধ্যে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী এবং লেবাননের সেনা মোতায়েন করা হবে। এ সময়ের মধ্যে সেনা মোতায়েনের জন্য আর মাত্র ১৭ দিন বাকি।