গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে ফেডারেল আদালতে অভিযুক্ত হয়েছেন মার্কিন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সাবেক সদস্য জন বোল্টন।
বিবিসি প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মার্কিন বিচার বিভাগ (ডিওজে) মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের একটি গ্র্যান্ড জুরির সামনে এ মামলা উপস্থাপন করেছে। জুরি বোর্ড মনে করেছে অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে এক বিবৃতিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন বোল্টন।
মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেল্ট আদালতে দাখিল করা ২৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে বলা হয়, তিনি নিজের ব্যক্তিগত ইমেইল ও মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শীর্ষ গোপন তথ্য অবৈধভাবে প্রেরণ করেছেন। বোল্টনের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য (এনডিআই) প্রেরণের ৮টি অভিযোগ এবং অবৈধভাবে এসব তথ্য সংরক্ষণের ১০টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এই নথিগুলো ভবিষ্যৎ হামলার পরিকল্পনা, বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বী এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করেছিল।
গোপন তথ্য ব্যবহারের অভিযোগে তদন্তের অংশ হিসেবে গত আগস্টে এফবিআই এজেন্টরা বোল্টনের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিল। ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ৭৬ বছর বয়সী বোল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিচারপ্রক্রিয়া শেষে প্রতিটি অভিযোগে বোল্টনের সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
অন্যদিকে বোল্টন এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি আদালতে নিজের আইনসঙ্গত আচরণ প্রমাণ করতে আগ্রহী এবং অভিযোগ করেন, ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।
বোল্টনের আইনজীবী অ্যাবে লোয়েল বলেন, অভিযোগগুলোর ভিত্তি হলো তার ক্লায়েন্টের ব্যক্তিগত ডায়েরি-নোট, যা তিনি গত ৪৫ বছরের সরকারি জীবনে লিখেছিলেন। অনেক সরকারি কর্মকর্তা ইতিহাসে ডায়েরি রেখেছেন। এটা কোনো অপরাধ নয়। এসব নোট শ্রেণিবদ্ধ ছিল না, শুধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই ভাগ করা হয়েছিল এবং এফবিআই ২০২১ সাল থেকেই বিষয়টি জানত।
তবে অভিযোগে বলা হয়েছে, বোল্টনের বাসা থেকে পাওয়া ওই নথিগুলোতে তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বকালীন সময়ের ডায়েরি-ধরনের নোট। এগুলো তিনি প্রিন্ট করে রেখেছিলেন।
বোল্টনকে ২০১৯ সালে বরখাস্ত করে ট্রাম্প প্রশাসন। পরে ২০২০ সালে প্রকাশিত 'দ্য রুম হোয়্যার ইট হ্যাপেন্ড' বইতে ট্রাম্পকে ভূরাজনীতি সম্পর্কে অজ্ঞ প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্ণনা করেন বোল্টন।
বইটি প্রকাশের আগে হোয়াইট হাউস আদালতে মামলা করে বইটি বন্ধের চেষ্টা করে, যুক্তি দেখায় যে এতে শ্রেণিবদ্ধ তথ্য রয়েছে। আদালত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে এবং বইটি প্রকাশিত হয়।
কেএম