মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড উপকূলে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাবাহী নৌকা ডুবে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে বৈশ্বিক সংস্থা দুটি।
যৌথ বিবৃতিতে সংস্থা দুটি জানায়, প্রায় ৭০ জনকে বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে। থাইল্যান্ড উপকূলে দুই কিশোরীসহ ২১ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকায় থাকা বাকিদের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি।
ইউএনএইচসিআর ও আইওএম মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয়দের জীবনরক্ষাকারী প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে। সংস্থাগুলো জানিয়েছে, তারা জীবিতদের সহায়তায় স্থানীয় প্রশাসনকে সমর্থন দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্ভাব্য প্রাণহানির ব্যাপারে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। কারণ খবর পাওয়া গেছে আরও একটি নৌকা এখনো সমুদ্রে ভাসছে, যাতে প্রায় ২৩০ জন রোহিঙ্গা রয়েছে।
আরও পড়ুন
ইসলামাবাদে আদালতের বাইরে বিস্ফোরণে নিহত ১২
রাস্তার পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে ৫ হাজার ৩০০-রও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় পা রেখেছেন। এর মধ্যে ৬০০ জনেরও বেশি নিখোঁজ বা প্রাণ হারিয়েছেন।
ইউএনএইচসিআর ও আইওএম জানিয়েছে, বাংলাদেশের কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে সীমিত সহায়তা, কর্মসংস্থানের অভাব, মিয়ানমারে চলমান সংঘাত ও মানবিক সংকট- সব মিলিয়ে আরও বেশি রোহিঙ্গা নিরাপত্তার খোঁজে প্রাণঘাতী সমুদ্রপথে যাত্রা করতে বাধ্য হচ্ছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসব বিপজ্জনক যাত্রায় অংশ নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।
যৌথ বিবৃতিতে সংস্থা দুটি বলেছে, সমুদ্রে বিপদাপন্নদের জীবন রক্ষা মানবিক দায়িত্ব এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনে এটি একটি বাধ্যবাধকতা। সংস্থা দুটি অনুসন্ধান ও উদ্ধার সক্ষমতা বাড়াতে এবং শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়ে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে।
ইউএনএইচসিআর ও আইওএম মনে করে, যতদিন মিয়ানমারের সংঘাত ও রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুতির মূল কারণগুলো সমাধান না হবে, ততদিন পর্যন্ত এ বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রা থামানো কঠিন হবে।
আইওএম ও ইউএনএইসিআর বর্তমানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে শরণার্থী, অভিবাসী ও রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে জাতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে। তাদের লক্ষ্য জীবন রক্ষা, ঝুঁকি হ্রাস, মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া এবং রাষ্ট্রগুলোকে মিশ্র অভিবাসন কার্যকরভাবে পরিচালনায় সহায়তা করা।
জেপিআই/কেএসআর/এমএস

1 hour ago
4









English (US) ·