মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকদের বিক্ষোভ
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকরা। গত বছরের ৩১ মে তারিখের মধ্যে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সড়ক অবরোধ করেন তারা।
বিক্ষোভরত শ্রমিকরা জানান, ২০২৪ সালে তারা মালয়েশিয়া যাওয়ার কলিং ভিসা পান। তাদের নিয়োগানুমতি, বিএমইটির ছাড়পত্রসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু উড়োজাহাজ টিকিট জটিলতাসহ নানা কারণে তারা সময়মতো মালয়েশিয়া যেতে পারেননি। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা দেয় রাষ্ট্রীয় রিক্রুটিং সংস্থা বোয়েসেলের মাধ্যমে ১৮ হাজার শ্রমিককে মালয়েশিয়া পাঠানো হবে। সরকার প্রায় ৮ হাজার শ্রমিকের তালিকা চূড়ান্ত করে। তারা সবাই বিনা খরচে যাওয়ার কথা থাকলেও রাষ্ট্রীয় সংস্থা বোয়েসেল তাদের কাছ থেকে এক লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু বোয়েসেল দফায় দফায় টাকা নিয়েও একজন শ্রমিককেও মালয়েশিয়া নিতে পারেনি।
বিক্ষোভকারী শ্রমিক চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ইকরাম উদ্দিন বলেন, ‘দাবি আমাদের একটাই মালয়েশিয়া যেতে চাই। আমরা কাজ করে খেতে চাই। অথচ বারবার আমাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। ঘুরাচ্ছে। আমরা কতদিনের মধ্যে যেতে পারব বা আদৌ যেতে পারব কিনা কোনোটাই নিশ্চিত বলতে পারছি না। বোয়েসেল বা বায়রার কাছ থেকেও কোনো জবাব পাচ্ছি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বায়রার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, এই শ্রমিকরা গত বছরের ৩১ মের আগেই মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। মালয়েশিয়ান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় লেভি পরিশোধ করে তাদের পাঠানোর জন্য কলিং ভিসা পাওয়া গেছে। কিন্তু সময়মতো তারা মালয়েশিয়া যেতে না পারার কারনে সরকারের নির্দেশে প্রত্যেক শ্রমিকের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ওই টাকা ফেরত দেওয়ার পর তাদের লেভিসহ নিয়োগানুমতি বাতিল হয়ে গেছে। এর মধ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা দিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বোয়েসেলের মাধ্যমে তাদের মালয়েশিয়া পাঠানো হবে। কিন্তু এসব নিয়োগানুমতি হয়েছিল বেসরকারি বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে। সরকার তাদের এসব শ্রমিক পাঠানোর অনুমতি দিলে তারা দ্রুততার সঙ্গে এসব শ্রমিক পাঠিয়ে দিতে পারত। কিন্তু বোয়েসেলকে দেওয়ায় তারা এখন পর্যন্ত একজন শ্রমিকও পাঠাতে পারেনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব শ্রমিক পাঠানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বোয়েসেল সময়মতো এসব শ্রমিক না পাঠাতে পারলে নতুন করে জটিলতা দেখা দিবে।
বায়রার অপর একজন নেতা বলেন, বোয়েসেল শ্রমিকপ্রতি যে টাকা আদায়ের সার্কুলার দিয়েছে সেটা যৌক্তিক নয়। তারা বলছে সার্কুলারে ঘোষিতা টাকার মধ্যে এক লাখ টাকা ভিসা ট্রেড বাবদ। তারা কিভাবে কাদেরকে এই টাকা দিবে এই বিষয়ে পরিষ্কার কোনো ঘোষণা দেয়নি।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানার জন্য বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, শ্রমিকদের পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।