মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততা বজায় রাখার জন্য সহকর্মী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম। সোমবার (২৭ অক্টোবর) ইস্ট এশিয়া সম্মেলনে (ইএএস) বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই আহ্বান জানান। মিয়ানমারকে তার নিজস্ব জাতীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বর্তমানে আসিয়ানের (ASEAN) সভাপতির দায়িত্বে থাকা আনোয়ার জানান, মিয়ানমারের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজধানী কুয়ালালামপুরে দেশটির ২৭টি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনা সভার আয়োজন করবে মালয়েশিয়া।
সেনাশাসিত মিয়ানমারে আগামী ২৮ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা—যা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির বেসামরিক সরকার উৎখাতের পর প্রথম জাতীয় ভোট। তবে পর্যবেক্ষক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই নির্বাচনকে ‘প্রহসনমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছে। আসিয়ান এখনো দেশটিতে স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তদারকির জন্য পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে বিবেচনা করছে।
দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম আরও জানান, গত এপ্রিলে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে আসিয়ান যে দুটি শর্ত নির্ধারণ করেছিল—তা মেনে নিতে সম্মত হয়েছেন দেশটির সামরিক সরকারপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। শর্ত দুটি হলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং সব নাগরিকের জন্য আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর ফিল্ড হাসপাতালগুলোতে পূর্ণ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
আনোয়ার বলেন, গত এক বছরে আমরা কিছুটা অগ্রগতি দেখেছি—যদিও বিচ্ছিন্ন গোলাগুলির অভিযোগ এসেছে, তবে আগের মতো ব্যাপক নয়। বেইজিং সফরেও আমি আবার ঐকমত্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছি। যদিও আমরা সব বিষয়ে একমত নই, তবুও আমি সহকর্মীদের অনুরোধ করব—সম্পৃক্ততা ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখুন এবং মিয়ানমারকে তার নিজস্ব প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিন। একইভাবে, আনোয়ার উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পরও দেশটির সঙ্গে ‘কিছু মাত্রার যোগাযোগ’ বজায় রাখার আহ্বান জানান।
দক্ষিণ চীন সাগরের সীমান্ত বিরোধ প্রসঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসিয়ান ও আঞ্চলিক অংশীদারদের উচিত বহিরাগত হস্তক্ষেপ ছাড়াই পার্থক্যগুলো সমাধান করা।
গাজা সংকট নিয়ে আলোচনায় আনোয়ার বলেন, ইস্ট এশিয়া সম্মেলনের সদস্য দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, যাতে ফিলিস্তিন ইস্যুর একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধান নিশ্চিত হয়। গত মাসে ঘোষিত এই শান্তি পরিকল্পনা আরব ও মুসলিম প্রধান কয়েকটি দেশেরও সমর্থন পেয়েছে।
বার্ষিকভাবে অনুষ্ঠিত ইস্ট এশিয়া সম্মেলনে আসিয়ানের ১০টি সদস্য রাষ্ট্রের পাশাপাশি আটটি প্রধান অংশীদার দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারত, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া—অংশগ্রহণ করে। এই বছরই সম্মেলনের ২০তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে; ২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো কুয়ালালামপুরেই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এমএমকে/

11 hours ago
7








English (US) ·