রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের তৃতীয় দিনেও গোডাউন থেকে বের হচ্ছে সাদা বিষাক্ত ধোঁয়া। ধোঁয়ার কারণে ফায়ার ফাইটাররা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে পারছেন না।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, উদ্ধার অভিযান চালাতে ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, এখনো গুদামের ভেতরে কুণ্ডলীর মতো সাদা ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। এতে ফায়ার ফাইটারদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
গতকাল বুধবার ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ দল কেমিক্যাল স্যুট পরে গুদামের প্রধান ফটক খুলতে সক্ষম হয়, তবে ভেতরে প্রবেশ করা যায়নি। ভেতরে প্রচুর সাদা ধোঁয়া রয়েছে, যা অত্যন্ত বিষাক্ত।
আরও পড়ুন
কেমিক্যাল ফায়ার স্যুট পরে গোডাউনের ভেতরে ঢুকছে ফায়ার ফাইটাররা
‘আদরের ভাইটা এভাবে শুয়ে থাকবে কল্পনাও করতে পারিনি’
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নাজমুজ্জামান জানান, গোডাউনে থাকা বিভিন্ন কেমিক্যালের ধোঁয়া থেকে টক্সিক গ্যাস তৈরি হয়ে বাতাসে মিশে গেছে। এছাড়া ক্লোরিন গ্যাস ছড়িয়েছে। এতে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস, ফুসফুস, হার্ট ও ত্বকের সমস্যা হতে পারে, যা ঘনবসতি এলাকার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান সিরাজ বলেন, কেমিক্যালের টক্সিক গ্যাস মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমরা অনবরত অক্সিজেন নিচ্ছি, এই অক্সিজেনের সঙ্গে টক্সিক গ্যাস মিশে মানবদেহে প্রবেশ করে। ফুসফুসের এমন ক্ষতি করবে যা কেউ জানবেও না। এজন্য সবার কছে অনুরোধ কেউ যেন ভিড় না করে। সবাই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখি এবং মাস্ক ব্যবহার করি।
গতকাল বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ভবনটি অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কলামসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ভবনে সরাসরি সার্চ অপারেশন চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ধাপে ধাপে কাজ করার কারণে উদ্ধার অভিযান শুরু হতে আরও ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজদের বিষয়ে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত আলম ট্রেডার্সের মূল ফটক তালাবদ্ধ ছিল, যা ফায়ার সার্ভিসের যন্ত্রপাতি দিয়ে কেটে খুলতে হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে কেউ ছিলেন না। তবে সার্চ অপারেশন সম্পন্ন হওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে সেখানে কেউ ছিলেন কি না।
টিটি/কেএসআর/এএসএম