বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরের রাজধানী কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় দূতাবাস হল রুমে শিশির কুমার সরকারের সঞ্চালনায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, শহীদদের রুহের মাগফিরাত, আহতদের সুস্থতা, দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন মো. নোমান উদ্দিন আজহারী।
পরে গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করার পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মো. ইসমাইল হোসেন ও দূতালয় প্রধান শিশির কুমার সরকার।
দিবসটির ওপর নির্মিত ঢাকা থেকে পাঠানো একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করার পর বক্তব্য দেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ।
রাষ্ট্রদূত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি অভ্যুত্থানে আহত, পঙ্গু বা দৃষ্টিশক্তি হারানো সকল সাহসী জুলাইযোদ্ধার ত্যাগ ও অবদান গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে জুলাই অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকার জন্য তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সামিনা নাজ উল্লেখ করেন, জুলাই অভ্যুত্থান ছিল বৈষম্য, দুর্নীতিমুক্ত একটি নতুন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সম্মিলিত লড়াই, যার মূল লক্ষ্য ছিল জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করা। হাজার হাজার মানুষের এই আত্মবিসর্জন আমাদের জাতীয় সংস্কারের জন্য এক বিরল সুযোগ এনে দিয়েছে। ন্যায়বিচার ও সাম্যের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের গণমানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সবার এই উদ্যোগে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা উচিত।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও মিশরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে গাজায় চলমান মানবিক সংকটকালীন পরিস্থিতিতে মিশরের ভূমিকার জন্য মিশর সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং ফিলিস্তিনী জনগণের প্রতি বাংলাদেশের সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণের দৃঢ় সমর্থনের প্রতি আলোকপাত করেন।
রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের পর বাংলাদেশ দূতাবাস কায়রো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর ভিত্তি করে আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজন করে।
তিনি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ও অন্যান্য অতিথিদের আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখান এবং বিভিন্ন আলোকচিত্রের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বাংলাদেশি প্রতিনিধি, মিশরে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, শ্রমজীবীসহ বাংলাদেশি গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। অনুষ্ঠানের শেষে তাদের বাঙালি ঐতিহ্যের রাতে খাবার পরিবেশন করা হয়।
এমআরএম/জিকেএস