মিয়ানমারে মানবিক সংকটের মধ্যেই বোমাবর্ষণ জান্তা সরকারের

2 days ago 15

মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট মানবিক সংকটের মধ্যেই বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সামরিক জান্তা। 

জবাবে বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে, ভূমিকম্পে মানুষ যখন বিপর্যস্ত, তখনও সামরিক বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত রেখেছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্পে প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকা পড়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। 

শুক্রবার ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প দেশটির সাগাইং অঞ্চলকে সবচেয়ে বেশি কাঁপিয়ে দেয়। তবে বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরাবতী নদীর ওপর একটি সেতু ভেঙে পড়ায় উদ্ধারকর্মীরা দুর্গত অঞ্চলে যেতে পারছেন না।

এর মধ্যেই জান্তা বাহিনী কারেন রাজ্যে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংগঠন ফ্রি বার্মা রেঞ্জার্স। তারা জানিয়েছে, হামলাগুলো কেএনইউ’র সদর দপ্তরের কাছাকাছি এলাকায় চালানো হয়েছে।

কেএনইউ এক বিবৃতিতে বলেছে, সামরিক বাহিনীর এখন প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিত ত্রাণ কার্যক্রম চালানো। কিন্তু তারা উল্টো নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে।

এদিকে ভূমিকম্পের পরপরই আসিয়ান জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি বৈঠক করেছেন। সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান মিয়ানমারে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে সামরিক জান্তার মুখপাত্র রয়টার্সের এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ও গণতন্ত্রপন্থিরা জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এতে গৃহযুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে।

শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে সামরিক অভিযান কিছুটা কমবে বলে ধারণা করা হলেও বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, জান্তা বাহিনীর এ হামলা মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলবে।

দেশটিতে এখন ভূমিকম্পের ভয়াবহতা কাটিয়ে ওঠার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা ও যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। কিন্তু সামরিক জান্তা বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়ায় দেশটি আরও মানবিক সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

Read Entire Article