মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

3 weeks ago 7

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহা. সাকির হোসেন।

সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে ‘চলমান সংকট উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন করবেন না মর্মে’ লিখিত দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।

এদিন দুপুরে কলেজের নতুন ভবনের চতুর্থ তলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহা. সাকির হোসেনকে আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও হাসিনার দোসর আখ্যা দিয়ে তার অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা।

প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশ এসে সাকির হোসেনকে উদ্ধার করে ভবনের বাইরে নিয়ে যায়। বের হওয়ার সময় কলেজের প্যাডে কলেজে না আসার কথা লিখে সই করেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেনের ছোট ভাই রাকিব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাকিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাগর হত্যা মামলার আসামি। সাকির হোসেন চিহ্নিত আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও হাসিনার দোসর। তাকে এই কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে শিক্ষার্থীরা দেখতে চাচ্ছে না। তাই গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছে।

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

আরেক শিক্ষার্থী মোহন হোসেন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন দেশ পেয়েছি। কলেজে আমরা কোনো ফ্যাসিস্টকে দেখতে চাই না। তাই সব শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে পুলিশ পাঠানো হয়। নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

এর আগে ২০২১ সালের ৮ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশে উপসচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ সই করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক মো. আমান উল্লাহকে পদায়ন করা হয়েছিল।

তিনি একই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করে আসছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষকসহ অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল।

আমান উল্লাহর অপসারণ দাবিতে আন্দোলন করা হয়। পরে চলতি বছরের ৩১ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের (সরকারি কলেজ-২) উপসচিব মো. আব্দুল কুদদুস সই করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে ওএসডি করা হয়। এসময় একই কলেজের উপাধ্যক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান অধ্যাপক মোহা. সাকির হোসেন।

কামরুজ্জামান মিন্টু/জেডএইচ/জেআইএম

Read Entire Article