মেয়াদ আছে তো!
আপনার মাথাটা তো ঠিক আছে, তাই গর্দান খাড়া আছে! আর এই মূল্যবান মাথাটি প্রতিদিন যে জিনিসটার ওপর রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমান, সেটাই তো বালিশ। কিন্তু কজনই বা আছে, যারা বালিশের যত্ন নেয়? অনেকেই বছরের পর বছর ধরে একই বালিশ ব্যবহার করেন, সেটা তেলচিটচিটে হয়ে গেলেও পাত্তা দেন না। ভাবেন, আরে! কাজ তো চলছে!
কিন্তু সমস্যা হলো- শুধু বালিশ না, আমাদের আশপাশে এমন অনেক দরকারি জিনিস আছে, যেগুলোরও একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ বা এক্সপায়ারির সময় থাকে। সময়মতো সেগুলো বদলানো না হলে, ছোট ছোট জিনিস থেকেও হতে পারে বড় সমস্যা।
আরও পড়ুন : চোখ হারানোর আগে জেনে নিন চোখের স্ট্রোকের লক্ষণ ও প্রতিকার
আরও পড়ুন : ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণগুলো জেনে নিন
চলুন দেখে নিই, কোন কোন জিনিস কতদিন ব্যবহার করা নিরাপদ-
বালিশ
মেয়াদ : ২-৩ বছর
বেশি পুরনো বালিশ তেলচিটচিটে হয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়, আর ছারপোকার মতো পোকামাকড়ের আশ্রয় হয়ে ওঠে। উপরন্তু, বালিশের গড়ন নষ্ট হয়ে গেলে ঘাড়ব্যথাও হতে পারে।
স্লিপার
মেয়াদ : ৬ মাস
দীর্ঘদিন ব্যবহারে স্লিপারে ফাঙ্গাস জন্মায়, যা পায়ের মাধ্যমে শরীরে সংক্রমণও ছড়াতে পারে। তাই ছয় মাস পার হলে নতুন স্লিপার কিনুন।
শাওয়ার পাফ/স্পঞ্জ
মেয়াদ : ২ সপ্তাহ থেকে ৬ মাস
এই জিনিসটা প্রতিদিন ভেজা থাকে বলে দ্রুত জীবাণু জমে। গরম পানিতে ধুয়ে রাখলেও, একসময় জীবাণু থেকে যায়। আর এক পাফ অন্য কেউ ব্যবহার করাটা একেবারেই উচিত না।
তোয়ালে
মেয়াদ : ১-৩ বছর
ভেজা তোয়ালে ব্যাকটেরিয়ার জন্য আদর্শ জায়গা। নিয়মিত ধুলেও পুরনো তোয়ালে জীবাণু মুক্ত হয় না। তাই সময়মতো বদলে ফেলা দরকার।
দাঁতের ব্রাশ
মেয়াদ : ৩ মাস
টুথব্রাশের ব্রিসল নরম বা ছিঁড়ে গেলে বা আপনি ঠান্ডা-জ্বরে ভুগে থাকলে, ব্রাশ পাল্টে ফেলুন। না হলে ভাইরাস আবার ফিরে আসতে পারে।
হেয়ার ব্রাশ
মেয়াদ : ১ বছর
সপ্তাহে অন্তত একবার পরিষ্কার করুন। আর প্রাকৃতিক ব্রিসলের হলে আরও আগে বদলান।
সুগন্ধী / পারফিউম
মেয়াদ : ১-৩ বছর
সুগন্ধীর বোতল খোলার পর এর মেয়াদ কমে আসে। ২-৩ বছরের মধ্যে শেষ না করলে গন্ধও ভালো থাকবে না।
দৌড়ানোর জুতা
মেয়াদ : ২৫০-৩০০ মাইল ব্যবহারে
জুতার আয়ু কেবল সময় নয়, ব্যবহারে নির্ভর করে। ২৫০ মাইলের বেশি দৌড়ালে কুশন কমে যায়, পায়ে চাপ পড়ে, দুর্গন্ধ আর ব্যাকটেরিয়ার বাসা হয়ে যায়।
মসলা
মেয়াদ : ১-৩ বছর
পুরনো মসলায় সুগন্ধ ও স্বাদ কমে যায়। গুঁড়া মসলা হলে ৬ মাস পরই কার্যকারিতা হারায়।
আটা-ময়দা
মেয়াদ : ৬-১২ মাস
সাধারণ মানের হলে ৬ মাস, ভালো মানের হলে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র
মেয়াদ : ১৫ বছর
১৫ বছর দীর্ঘ সময়, কিন্তু যন্ত্রটা কাজ করছে কি না, সেটা নিয়মিত দেখে নেওয়া জরুরি। হোসপাইপ ফেটে গেলে সেটা আর কাজে আসবে না।
মাল্টি-প্লাগ
মেয়াদ : ১-২ বছর
নিয়মিত অতিরিক্ত চাপ পড়লে মাল্টি-প্লাগ নষ্ট হয়। এতে শর্টসার্কিট, আগুন লাগার ঝুঁকি থাকে। সময়মতো বদলে ফেলুন।
মশা নিরোধক স্প্রে
মেয়াদ : ২ বছর
দুই বছর পেরিয়ে গেলে এসব স্প্রে তেমন কার্যকর থাকে না। ফলে মশা মারবে না, উল্টো ক্ষতি হতে পারে আপনারই।
আরও পড়ুন : ত্বকের যেসব লক্ষণে বুঝবেন শরীরে কোলেস্টেরল বাড়ছে
আরও পড়ুন : জিহ্বার রং দেখে বুঝে নিন শরীরের ৫ সমস্যা
প্রতিদিন আমরা নানা জিনিস ব্যবহার করি, কিন্তু সেগুলোর মেয়াদ কতদিন, সেটা খুব কম মানুষই জানে বা মাথায় রাখে। অথচ সময়মতো বদলে ফেললে শুধু স্বাস্থ্যই ভালো থাকে না, দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কমে।
তাই এখনই একটু চারপাশে তাকিয়ে দেখুন- আপনার বালিশ, তোয়ালে, ব্রাশ বা জুতাটা কি মেয়াদ পার করে ফেলেছে?
সূত্র : ব্রাইটসাইড